আমাশয় সারানোর উপায়, লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিকার
আমাশয় সারানোর উপায়, লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিকার
আমাশয় সারানোর উপায়
আমাশয় সারানোর উপায়, লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিকার সম্পর্কে আজকে আমরা আপনাদের সামনে এই বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরবো। এছাড়াও আমরা আজ আমাশয় রোগের কারণ, আমাশয় রোগের লক্ষন, আমাশয় রোগের এন্টিবায়োটিক, সাদা আমাশয় রোগের ঔষধের নাম, রক্ত আমাশয় নিরাময়ের উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করবো।তাহলে চলুন জেনে নেই আমাশয় রোগের কারন, লক্ষন ও প্রতিকার সম্পর্কে।
আমাশয় রোগের কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিকার
- বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার কারনে আমাদের আমাশয় হয়ে থাকে।
- অপরিস্কার জীবন-যাপন করলে এই অসুখ হতে পারে।
- দূষিত খাবার খেলে আমাদের আমাশয় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- পানি দূষিত হলে আমাদের আমাশয় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- পূর্বে ডায়রিয়া হয়ে থাকলে তার মাধ্যমে আমাশয় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- খোলা খাবার বা অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার খেলে আমাদের আমাশয় হয়ে থাকে।
আমাশয় রোগের লক্ষণ
- আমাদের পেট ফোলা থাকে।
- পেটে ব্যথার মত সমস্যা হয়ে থাকে।
- ডায়রিয়ার মত সমস্যার সৃষ্টি হয়।
- মলের সাথে রক্ত পড়ে থাকে।
- পেট ফেপে থাকে সবসময়।
- বমি ভাব দেখা দেয়।
- প্রস্রাবের মাত্রা অনেক বেশি পরিমানে কমে যায়।
- আমাদের ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।
- অনেক বেশি পরিমানে পানির তৃষ্ণা পায়।
- আমাদের প্রায় সময় জ্বর ও সর্দি থাকে।
- আমাদের পেশীতে খিচুনীর মত ব্যথা হয়।
- আমাদের দেহের ওজন কমে যায়।
পুরাতন আমাশয় এর লক্ষণ
- পেটে মোচড়ানোর মত সমস্যা দেখা দেয়।
- পেটে ব্যথা হয়ে থাকে।
- পেটে অনেক বেশি গ্যাসের সমস্যা হয়ে থাকে।
- মলের মাধ্যমে আমাদের দেহ থেকে মিউকাস সরন হয়।
- কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা দেখা যায়।
- ডায়রিয়া দেখা দেয়।
- যাদের বয়স ৫০ বছরের কম।
- মহিলাদের এই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
- রাতে ঘুমের সমস্যা থাকলে তাদের ক্ষেত্রে এই অসুখ অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।
- যারা অনেক বেশি পরিমানে এন্টিবায়োটিক সেবন করে থাকে।
- অতিরিক্ত মানসিক চাপ নিয়ে যারা সবসময় টেনশনে থাকে।
- প্রতিদিন সময় করে আমাদের ব্যায়াম করা উচিত।
- মেডিটেশন করলেও এই অসুখের মাত্রা অনেকটা কমে যায়।
- অনেক বেশি পরিমানে একসাথে না খেয়ে সেই খাবার ২-৩ বারে খাওয়া।
- খাবার খাওয়ার সময় আমাদের ভালোভাবে চিবানো।
- প্রতিদিন কমপক্ষে ২-৩ লিটার পানি পান করা।
- আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিলে ইসবগুলের ভুসি সেবন করা।
- খাবার স্যালাইন বা ডাবের পানি পান করা।
- আমাদের প্রতিদিন ৮ ঘন্টা ঘুমানোর অভ্যাস করা।

আমাশয় সারানোর উপায়
- আমাশয় হলে আমরা বেত ফল খেতে পারি। কারন বেত ফলে অনেক বেশি পরিমানে প্রোটিন, পেক্টীক এসিড এবং পটাশিয়াম থেকে থাকে। এছাড়া এই ফলে আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন থেকে থাকে। আমাদের আমাশয় দূর করতে এই বেতফল অনেক কার্যকরী। বেতফলের শাস খেলে আমাশয় চিরতরে শেষ হয়ে যায়।
- আমাশয় নামক অসুখ কমাতে আমরা হলুদ খেতে পারি। কারন এক গবেষনায় দেখা গেছে আমাশয় এর সমস্যায় যদি আমরা হলুদ সেবন করি তাহলে আমাদের ৬০% আমাশয় কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- আমাশয় দূর করতে আরেকটি উপকরন হলো থানকুনি পাতা। থানকুনি পাতা আমাদের পেট থেকে সব খারাপ বর্জ্য বাইরে বের করে আমাদের পেট পরিস্কার রাখতে সাহায্য করে। থানকুনির পাতার সাথে চিনি বা গুড় মিশিয়ে আমরা ৭-৮ দিন একটানা খেলে আমাশয় কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- আদা চা আমাশয় রোগের জন্য অনেক উপকারী। আদা চা আমাদের পেটে থাকা খাবার হজম করতে সাহায্য করে। যার কারনে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হয় না এবং আমাদের পেট সবসময় পরিস্কার থাকে। এর কারনে আমাদের আমাশয় অনেকটা কমে যায়।
- কারিপাতা তে আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন থাকে। আমাদের আমাশয়ের সমস্যায় আমরা এই কারিপাতা সেবন করতে পারি।
- পুদিনা পাতা এবং লেবু আমাদের দেহের অতিরিক্ত ওজন কমানোর পাশাপাশি আমাদের পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। আমাদের পেটের সমস্যায় আমরা পুদিনা পাতার চা খেতে পারি।
- আম ও জামপাতার রস আমাশয় দূর করতে সাহায্য করে। আমরা প্রতিদিন ২-৩ চা চামচ আম বা জামপাতার রস খেলে আমাদের আমাশয় ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- আমাশয় একবারে নির্মূল করার ক্ষেত্রে আমরা তেতুল খেতে পারি। এর জন্য আমাদের তেতুল ভিজিয়ে রেখে তারপর খাবারের সাথে তা খাওয়া উচিত।
- বেল খেলে আমাদের আমাশয় এর সমস্যা দূর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- দূর্বা ঘাস আমাশয় ভালো করতে সাহায্য করে। এই ক্ষেত্রে দূর্বা ঘাসের রস নিয়ে ২-৩ দিন খেলে আমাদের এই অসুখ নির্মূল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আমাশয় রোগের ঔষধ কোনটি
- Alexid 200 mg
- Metranodizole
- Tinidazole
- Secnidazole
আমাশয় রোগের এন্টিবায়োটিক
- Norflox TZ Tablet
- Secnidazole
- Safetriaxon
- Pivmessilinam
- Basilax Tablet
- Pivicil Tablet
- Flagyl Tablet
- Alexid Tablet ইত্যাদি।
পুরাতন আমাশয় রোগের ঔষধ
- Emcil Tablet
- Lexipen Tablet
- Zox Tablet
- Relexid Tablet
- Pinam Tablet ইত্যাদি।
রক্ত আমাশয় নিরাময়ের উপায়
- প্রতিদিন ১-২ ঘন্টা ব্যায়াম করা দরকার।
- মেডিটেশন করা এবং যোগ ব্যায়াম করা।
- অনেক বেশি পরিমানে একসাথে না খাওয়া। খাবার ২-৩ বারে খাওয়া।
- খাবার খাওয়ার সময় আমাদের ভালোভাবে চিবানো।
- প্রতিদিন আমাদের অন্তত ২-৩ লিটার পানি পান করা।
- কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিলে ইসবগুলের ভুসি সেবন করা।
- খাবার স্যালাইন বা ডাবের পানি পান করা।
- আমাদের প্রতিদিন ৮ ঘন্টা ঘুমানোর অভ্যাস করা।
সাদা আমাশয় রোগের ঔষধের নাম
- Flazil 400 mg
- Zox Tablet
- Alexid
- Pivicilin
- Emicil
- Pinam ইত্যাদি।
আমাশয় সারানোর উপায় (FAQ)
