Rajshahi IT BD
Information based blog for new generation
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায় জেনে নিন

0 151

সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায় জেনে নিন

 

সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায়

আসসালামু-আলাইকুম। আজকে আমাদের পোস্ট সিজার সম্পর্কিত। অনেক গর্ভবতী নারী আছেন যারা সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায়, কতদিন পর সেলাই কাটতে হয়, মাসিক কতদিন পর হয়, বাচ্চা কতদিন পর নিতে হয় ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে চান।সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায়আজকে আমরা সিজার পরবর্তী বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করবো। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক সিজার পরবর্তী বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে। 

সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায়

আজ থেকে ২০-৩০ বছর আগে গর্ভবতী মায়ের বাচ্চা হওয়ার জন্য অনেক কষ্ট করতে হত। সেসময় হাতের কাছে তেমন ডাক্তার পাওয়া যেত না। বাচ্চা হওয়ার সময় তখন মা ও শিশুর মৃত্যুর হার ছিল অনেক। অনেক সময় বাচ্চা নরমাল ডেলিভারিতে হয়ে যেত। কিন্তু অনেক ঝুকি থাকতো।
কিন্তু বর্তমানে একজন গর্ভবতী নারীর বাচ্চা হওয়ার জন্য তেমন কষ্ট পোহাতে হয় না। এখন গর্ভবতী নারীরা তাদের লেবার পেইন সহ্য করতে না পারলে বাচ্চা সিজারে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে বাচ্চা ও মা দুজনেই ভালো থাকে। বর্তমানে মা ও শিশু মৃত্যুর হার অনেকাংশে কমে গেছে।
কারন এখন সব প্রাইভেট মেডিক্যাল, সরকারি হাসপাতাল ইত্যাদিতে অনেক উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। গর্ভবতী নারীদের একটা সাধারন প্রশ্ন হচ্ছে, সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায়। উত্তর হচ্ছে, প্রতিটি সিজার করা নারীদের তাদের সেলাই শুকাতে প্রায় ৬-৭ সপ্তাহ সময় লেগে যায়।
সেক্ষেত্রে একজন নারীর বয়স এবং ওজনের ওপর তা নির্ভর করবে। সেলাই খুব দ্রুত শুকানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমানে বিশ্রাম নিতে হবে। সেক্ষেত্রে বিশ্রাম এর সময় হবে রাতে প্রায় ৮ ঘন্টার মত, দিনে প্রায় ২-৩ ঘন্টার মত। সিজার করার পর প্রায় ৩-৪ মাস কোনো ভারী কাজ করা যাবে না।

সিজারের কতদিন পর সেলাই কাটতে হয়

সিজার করার সময় দুই ধরনের সুতা ব্যবহার করা হয়। নরমাল সুতা এবং কসমেটিক সুতা এই দুই ধরনের সুতা ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের সুতা একজন গর্ভবতী নারীর দেহে খুব সহজেই মিশে যায়। যাতে করে সুতা শরীরের সাথে মিশে যায় এবং কোনো প্রকার পচন না ধরে।
আমাদের দেশে বিভিন্ন চিকিৎসালয় এ সিজার করার পর মোটামুটি ১ সপ্তাহ পর সিজার এর সুতা কাটার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে কতদিন এর মধ্যে সিজার এর সুতা কাটা একজন নারীর জন্য ভালো হবে তা ছাড়পত্রের সাথে লিখে দেওয়া থাকে। এছাড়া কোনো সমস্যা হলে সরাসরি ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া ভালো।

সিজারের পর সেলাই ফুলে যায় কেন

সিজার করা জায়গায় ফুলে থাকা বা গুটির মত হয়ে থাকা এক ধরনের সাধারন সমস্যা। অনেকসময় এটি নিজে থেকে সেরে যায়। তবে অনেকসময় এটি ইনফেকশনের মত সমস্যার সৃষ্টি করে। তখন সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উত্তম। নিম্নোক্ত কারনে সিজার এর পর ক্ষতস্থান ফুলে যায়। কারনগুলো হলোঃ
  • শরীরে অশোষন যোগ্য সেলাই করা।
  • অপারেশন শুরুর আগে যদি জীবানুর সম্পর্কে সঠিক সতর্কতা অবলম্বন না করা হয়।
  • সিজার করার সময় ত্বক পরিস্কার না করা।
  • সিজারের আগে ডাক্তাররা যদি তাদের হাত জীবানুমুক্ত না করেন।
  • জীবানুমুক্ত গ্লাভস ব্যবহার না করা।
  • সিজারের পর যদি রোগী ক্ষতস্থান ঢেকে না রাখে।
  • সিজার পরবর্তী সময়েই ভারী কাজ করা ইত্যাদি।
আরও পড়ুন  টনসিল ইনফেকশনের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
যদি সিজার করা স্থানের ব্যথা খুব বেশি হয়ে যায় অর্থাৎ সহনীয় পর্যায়ে আর না থাকে, তখন এটি ইনফেকশনের ইংগিত করে। এই সংক্রমন সারানো অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে থাকে। তাই সিজার এর স্থানে নিম্নোক্ত লক্ষনগুলি দেখা দিলে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। লক্ষনগুলি হলোঃ
  • ক্ষতস্থানের কাছে ত্বক ফুলে যাওয়া।
  • সিজার স্থানের জায়গায় লালচে ভাব দেখা দেওয়া।
  • ক্ষতস্থানে পুজ জমে যাওয়া বা জমা শুরু হওয়া।
  • ক্ষতস্থানের ব্যথার কারনে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া।
  • কোনো কারনে সেলাই এর কোনো জায়গা খুলে যাওয়া।
  • ক্ষতস্থানে অসহ্য ব্যথা হওয়া।
সিজারের পর সেলাই ফুলে যায় কেন

 

উপরোক্ত লক্ষনগুলো দেখা দিলে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ

অনেকসময় শোনা যায় যে, সিজার করার পর সেই ক্ষতস্থানে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই সমস্যাগুলোর কারনে সিজারিয়ান রোগীর মৃত্যুঝুকিও থাকে। কিন্তু অনেক সিজারিয়ান রোগী সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ গুলো ধরতে পারেন না অথবা বুঝতে পারেন না। এ কারণে সমস্যাগুলো বাড়তে থাকে এবং একপর্যায়ে অনেক বড় আকার ধারণ করে। এখন আমরা সিজারের পর ইনফেকশনের কি কি লক্ষণ দেখা দেয় তা সম্পর্কে জানব। লক্ষণগুলি হলোঃ
  • সিজার করার পর কাটাস্থান আস্তে আস্তে ফুলে যাবে। একসময় সেখান থেকে প্রচুর পরিমানে ব্যথা হবে।
  • সিজার করা ক্ষতস্থান থেকে পুজ ও রক্ত বা পানি বের হলে ধরে নেওয়া হয় সেখানে ইনফেকশন হয়েছে।
  • সিজার করা ক্ষতস্থানে ইনফেকশন হলে রোগীর পা আস্তে আস্তে ফুলে যাবে এবং উক্ত নারীর যোনীর রাস্তা দিয়ে বিভিন্ন তরল পদার্থ বের হবে।
  • অনেক সময় সিজার করা জায়গা থেকে ইনফেকশন বুক পর্যন্ত পৌঁছে যায়, সেক্ষেত্রে বুক ব্যাথা হতে পারে।
  • যদি আপনার প্রসাব করার সময় প্রসাবের রাস্তায় অনেক ব্যথা বা যন্ত্রনা হয়, তবে সেটা ইনফেকশনের কারন হতে পারে।
উক্ত লক্ষনগুলো দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে দেখা করে পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারন ইনফেকশন নিয়ে থাকা ঠিক নয়। এতে মৃত্যু ঝুকিও থেকে থাকে।

সিজারের পর ইনফেকশন হলে করণীয়

  • প্রতিদিন উক্ত ক্ষতস্থান পানি এবং এন্টিসেপটিক দিয়ে পরিষ্কার করা।
  • যেসকল সুতা খুব সহজে শরীরের সাথে মিশে যায় না, এইরকম সুতা দিয়ে সিজার করা থাকলে অপারেশনের ৬-৭ দিন পর খুলে ফেলা।
  • ক্ষতস্থান সবসময় শুকনা রাখার চেষ্টা করতে হবে।
  • পর্যাপ্ত পরিমানে বিশ্রাম নিতে হবে।
  • পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।
  • ভিটামিন-সি যুক্ত খাবার খেতে হবে।
  • প্রচুর পরিমানে পানি পান করতে হবে।
  • সাবধানে চলাফেরা করতে হবে।
  • ভারী কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • খেয়াল রাখতে হবে যেন ক্ষতস্থানে ময়লা বা ঘাম না জমে।
আরও পড়ুন  কি খেলে গর্ভের বাচ্চার ওজন বাড়ে বিস্তারিত জেনে নিন

সিজারের পর বেল্ট পরার নিয়ম

সিজার করার পর প্রায় ১-২ সপ্তাহ পর বেল্ট ব্যবহার করা যায়। বেল্ট ব্যবহার করার কারন হলো কাটা স্থান যেন কম নড়াচড়া হয়। বিভিন্ন সময় এই বেল্ট ব্যবহার করা হয় যেমন- হাচি,কাশি এবং টয়লেট এ যাবার সময় এই বেল্ট ব্যবহার করা উত্তম। যদি ডেলিভারী নরমালে হয়, তবে ডেলিভারির একদিন পরেই বেল্ট ব্যবহার করা যায়।
অন্যদিকে সিজার করা হলে সেলাই শুকানো অবধি অপেক্ষা করা উচিত। কারন সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায় তা না জেনে বেল্ট ব্যবহার করলে আমাদের ক্ষতি হতে পারে। প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ ঘন্টা সিজার বেল্ট পরা উত্তম। এই বেল্ট ১ মাস থেকে ৪০ দিন পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। এবার চলুন জেনে নেই বেল্ট ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে। নিয়মগুলো নিম্নরূপঃ
  • আমাদের কোমরের মাপ অনুযায়ী বেল্ট ব্যবহার করতে হবে।
  • বেল্ট বাধার সময় খুব শক্ত বা ঢিলে করে না বাধা উচিত।
  • খাবার খাওয়ার কমপক্ষে ৩০ মিনিট পর বেল্ট ব্যবহার করা উত্তম।
  • ইলাস্টিক ফাইবারযুক্ত বেল্ট ব্যবহার করতে হবে।
  • বেল্ট পরার পর ভারী কাজ করা থেকে দূরে থাকতে হবে।
সিজারের পর বেল্ট পরার নিয়ম

সিজারের কতদিন পর মাসিক হয়

অনেক গর্ভবতী নারীদের একটি সাধারন প্রশ্ন থাকে যে, সিজারের কতদিন পর মাসিক হয়? উত্তর হচ্ছে, এটি বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। যাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমানে পুষ্টি থাকে, তাহলে সিজার করার প্রায় ৪-৫ সপ্তাহের মধ্যেই মাসিক শুরু হতে পারে। আবার অনেকের মাসিক হতে অনেকদিন সময় লেগে যায়।
যেসব মায়েরা বাচ্চাদের তাদের বুকের দুধ নিয়মিত খাওয়ান তাদের মাসিক হতে অনেক সময় লেগে যায়। এক্ষেত্রে মাসিকের সময় হচ্ছে প্রায় ২ মাসের মত। আর যেসব মায়েরা তাদের বুকের দুধের পাশাপাশি বাচ্চাদের ফল-মুল খাওয়ান তাদের ৫-৬ সপ্তাদের মধ্যে মাসিক শুরু হতে পারে।

সিজারের কতদিন পর মিলন করা যায়

সন্তান জন্মদানের পর মিলন করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন নিয়ম লক্ষ করা যায়। গর্ভবতী মেয়েদের দুই ভাবে বাচ্চা হয়ে থাকে। যেমনঃ
  • নরমাল ডেলিভারি
  • সি-সেকশন
আরও পড়ুন  বড়দের নিউমোনিয়া রোগের ১২টি লক্ষণ সম্পর্কে জানুন
নরমাল ডেলিভারীতে বাচ্চা হয়ে থাকলে, সেক্ষেত্রে ৪-৬ সপ্তাহ পর সহবাসে অংশ নেওয়া যায়। আর সি-সেকশন বা সিজার এর মাধ্যমে সন্তান হয়ে থাকলে ৬ সপ্তাহ পর মিলনে অংশ নিতে পারা যায়।সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায় তা একজন পুরুষ এবং নারীর জেনে রাখা উচিত। আমাদের উচিত সিজারিয়ান মা এর ক্ষেত্রে অন্তত ৭-১০ মাস পর মিলনে অংশ নেওয়া। এই সময়টাতে সিজারিয়ান মা এর প্রতিটি বিষয়ে প্রচুর খেয়াল রাখা উচিত।

সিজারের কতদিন পর বাচ্চা নেওয়া যায়

আমাদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন যে, প্রথমবার সিজারে বাচ্চা হলে দ্বিতীয়বার বাচ্চা নরমালে হবে না। কিন্তু আমাদের ধারনা ভুল। প্রথমবার বাচ্চা সিজারে হওয়ার পর দ্বিতীয়বার বাচ্চা নরমালে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। একে ভি-ব্যাক বলা হয়। একজন মায়ের দুইটি সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রে সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায় তা সম্পর্কে ধারনা থাকা দরকার।
একজন মায়ের দুইটি সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ঠ বিরতি দেওয়া উচিত। কারন এক্ষেত্রে দ্বিতীয় বাচ্চা নেওয়ার ক্ষেত্রে শিশুর মৃত্যু ঝুকি থেকে থাকে। তাই যদি কারো প্রথম বাচ্চা সিজারে হয় তবে দ্বিতীয় বাচ্চা নেওয়ার ক্ষেত্রে ১-২ বছর অপেক্ষা করা উচিত।

লেখকের মন্তব্য

আজকের পোস্ট থেকে আমরা সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায়, সিজারের কতদিন পর সেলাই কাটতে হয়, মাসিক কতদিন পর হয়, বাচ্চা কতদিন পর হয় ইত্যাদি সম্পর্কে জানলাম। আশা করি আজকের পোস্ট থেকে আপনি আপনার মূল্যবান তথ্য পেয়েছেন।
আমরা এই ধরনের আরও মূল্যবান তথ্যসমৃদ্ধ পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করে থাকি। নিয়মিত পোস্ট পড়তে এবং আমাদের সাথে কানেক্টেড থাকতে পেজ ফলোও করুন।
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Leave A Reply

Your email address will not be published.