Rajshahi IT BD
Information based blog for new generation
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ-সুস্থ কিডনির লক্ষণ

0 0

কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ-সুস্থ কিডনির লক্ষণ

 

কিডনি ইফেনকশনের লক্ষণ

আজকের পোস্ট এর মুল বিষয় কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ। এছাড়াও আজকের পোস্ট এ আমরা সুস্থ কিডনির লক্ষণ, কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ, কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার, কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয়, কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় ইত্যাদি সম্পর্কেও আলোচনা করবো।
কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ-সুস্থ কিডনির লক্ষণ
তাহলে চলুন জেনে নেই কিডনি সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে।

সুস্থ কিডনির লক্ষণ

আমাদের প্রতিদিনের বিভিন্ন অভ্যাসের কারনে আমাদের কিডনি রোগ হয়ে থাকে। কিডনি সমস্যা হলে আমাদের শরীরে অনেক বেশি পরিমানে টক্সিন ক্ষরন শুরু হয়। যার কারনে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। কিডনি আমাদের শরীরে ছাকনির মত কাজ করে থাকে।
আমাদের দেহ থেকে বিভিন্ন ধরনের দুষিত পদার্থ বাইরে বের করে দিতে সাহায্য করে। তবে অনেক ক্ষেত্রে এই দূষিত পদার্থ আমাদের দেহ থেকে বাইরে বের করা অসম্ভব পড়ে। এর কারন হিসেবে ধরা হয় আমাদের দেহে অতিরিক্ত পরিমানে শর্করা জাতীয় খাদ্যের পরিমান বেড়ে যায় অথবা আমাদের অতিরিক্ত রক্তচাপের কারনে এই কিডনির সমস্যা দেখা দেয়।
এই সমস্যার কারনে আমাদের দেহে কিডনি জাতীয় বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ জানার আগে চলুন জেনে নেই সুস্থ কিডনির লক্ষণ সম্পর্কে। সুস্থ কিডনির লক্ষনসমুহ নিম্নরুপঃ
  • দিনে আমাদের ৬-৮ বার এর মত প্রসাবের বেগ পায়।
  • প্রসাবের রং স্বাভাবিক থাকে।
  • অনেক বেশি পরিমানে খিদে পায়।
  • শরীর চঞ্চল থাকে।
  • পিঠের নিচে বা কোমরের দিকে অজানা ব্যথা হয় না।

কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ

প্রতিদিনের কাজকর্মের ওপর নির্ভর করে আমাদের কিডনি সমস্যা দেখা দেয়। যেকোনো বিষয়ে অনিয়মিত কাজ করলে আমাদের এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। কিডনি সমস্যার প্রধান লক্ষন হিসেবে ধরা হয় আমাদের কোমর বা পিঠের নিচে ব্যথা হয়।
এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের লক্ষন দেখা দেয়। এখন আমরা সেই লক্ষনগুলি সম্পর্কে আলোচনা করবো। লক্ষনগুলি নিম্নরুপঃ
  • আমাদের প্রসাবের মাধ্যমে রক্ত বা প্রোটিন বের হয়ে যায়।
  • প্রসাবে অনেক বেশি দুর্গন্ধ হয়ে থাকে।
  • সবসময় পেট খারাপ থাকে।
  • পূর্বের তুলনায় খিদে অনেক কম পরিমানে পায়।
  • দেহের ওজন হঠাত করে কমে যায়।
  • আমাদের উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়।
  • দেহে বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ দেখা দেয়।
  • অল্প সময়ে আমাদের দেহ ক্লান্ত হয়ে পড়ে।
  • নিঃশ্বাস নিতে অনেক বেশি সমস্যা হয়।
  • প্রায় সময় বমি বমি ভাব হয়।
  • মাথা ঘোরার মত সমস্যা সৃষ্টি হয়।
  • মাঝে মাঝে আমাদের মাংশপেশীতে টান ধরে।
  • ঘন ঘন প্রসাব হয়ে থাকে।
  • হাত এবং পায়ে অনবরত জালাপোড়া করে।
  • কাপুনি দিয়ে জর আসে।
  • কোমরে অনেক বেশি পরিমানে ব্যথা করে।
  • তলপেটে ব্যথা হতে থাকে।
আরও পড়ুন  গর্ভাবস্থায় জাফরান এর উপকারিতা ও অপকারিতা

কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ

পূর্বে আমরা কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ এবং সুস্থ কিডনির লক্ষণ সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা কিডনি ড্যামেজের বিভিন্ন লক্ষন সম্পর্কে জানবো। আমাদের দেহের ওপর বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার করার কারনে আমাদের দেহে এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
দেহের প্রতি আমরা যদি কন্সেন্ট্রেট করি তাহলে এই সমস্যা গুলো থেকে অনেকটাই রেহাই পাওয়া যায়। এখন চলুন জেনে নেই কিডনি ড্যামেজের বিভিন্ন লক্ষন সম্পর্কে। লক্ষনসমুহ নিম্নরুপঃ
  • শরীরে কাপুনি দিয়ে জ্বর আসা
  • পিঠ এবং কোমরে অনেক বেশি ব্যথা করা
  • ঘন ঘন প্রসাব হওয়া
  • প্রসাবের সাথে রক্ত বা পুজ বের হয়
  • প্রসাবে অনেক দুর্গন্ধ হয়
  • শরীর ফুলে যায়
  • মাথা ঘোরা শুরু হয়
  • খিচুনীর সমস্যা শুরু হয়।
  • বমি ভাব দেখা দেয়।
  • ক্ষুধা কমে যায়
  • শরীরের ওজন অনেকটা কমে যায় ইত্যাদি।
কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ

কিডনি রোগের লক্ষণ

কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ এবং সুস্থ কিডনির লক্ষণ সম্পর্কে পূর্বে আমরা জেনেছি। এখন কিডনি রোগের লক্ষন সম্পর্কে জেনে নিন। আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ এই কিডনি সমস্যায় ভুগে থাকেন। এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৮-১০ জন মানুষ এই কিডনির সমস্যার আক্রান্ত।
আমাদের কিডনি রোগের লক্ষন দুই সময়ে দেখা দেয়। প্রথম সময়টা হলো কিডনি ০-৬০% নষ্ট বা বিকল হলে। দ্বিতীয় সময়টা হলো কিডনি ৬১-১০০% বিকল হয়ে গেলে। এখন চলুন জেনে নেই কিডনি বিকল হলে প্রথম অবস্থায় কোন ধরনের লক্ষন দেখা দেয় তা সম্পর্কে। লক্ষনগুলি নিম্নরুপঃ
  • আমাদের শরীর অতিরিক্ত দুর্বল হয়ে পড়ে।
  • খাবারের প্রতি অনীহা চলে আসে।
  • হঠাত কোনো কারন ছাড়া বমি ভাব দেখা দেয়।
  • শরীরে বিভিন্ন ধরনের চুলকানির মত সমস্যা দেখা দেয়।
  • প্রসাবে দুর্গন্ধ হয়ে থাকে।
  • প্রসাব করলে অনেক বেশি ফেনা হয়ে থাকে।
  • অতিরিক্ত পরিমানে প্রসাব হয়ে থাকে।
এতক্ষন আমরা কিডনি সমস্যার প্রাথমিক লক্ষনগুলো সম্পর্কে জানলাম। এখন আমরা কিডনি সমস্যার গুরুতর লক্ষন সম্পর্কে জানবো। গুরুতর লক্ষনসমুহ নিম্নরুপঃ
  • আমরা যখন প্রসাব করি তখন অনেক বেশি পরিমানে জ্বালাপোড়া হয়।
  • তলপেটে অনেক বেশি ব্যথা অনুভুত হয়।
  • পিঠে এবং কোমরে প্রচন্ড ব্যথা অনুভুত হয়।
  • প্রসাবের সাথে রক্ত বা পুজ বের হয়।
  • শরীর ফুলে যায়।
  • উচ্চ রক্তচাপ এর মত সমস্যা দেখা দেয়।
  • খিচুনীর মত সমস্যা দেখা দেয়।
  • কাপুনি দিয়ে জ্বর আসে।
আরও পড়ুন  প্রচন্ড গরমে শরীর ঠান্ডা রাখার ৯টি উপায়

কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

পূর্বে আমরা কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ সম্পর্কে জেনেছি। এখন চলুন জেনে নেই কিডনি রোগের লক্ষন এবং প্রতিকার সম্পর্কে। কিডনি রোগের প্রধান কিছু লক্ষন এর মধ্যে ঘন ঘন জ্বর আসা, কোমরে অনেক বেশি পরিমানে ব্যথা করা, প্রসাবে রক্ত যাওয়া এবং ঘন ঘন প্রসাব হওয়া গুরুত্বপূর্ণ লক্ষন হিসেবে ধরা হয়।
একজন কিডনি রোগীর এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত তার প্রতিদিনের অভ্যাস পরিবর্তন করে ফেলা উচিত। কারন অভ্যাস পরিবর্তন না করলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এখন চলুন জেনে নেই কিডনি রোগের প্রতিকার সম্পর্কে।
  • ডায়াবেটিস অথবা উচ্চ রক্তচাপ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা।
  • প্রতিদিন নিয়ম মেনে শরীরচর্চা করা।
  • দিনে অন্তত ৩০ মিনিট হাটার অভ্যাস তৈরি করা।
  • শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলা।
  • ধুমপানের মত অভ্যাস থেকে দূরে থাকা।
  • আমাদের প্রতিদিনের খাবারে লবন এর পরিমান কম রাখা।
  • আমাদের রক্তে কোলেস্টেরল এর পরিমান ঠিক আছে কি না তা চেক করা এবং ঠিক না থাকলে কোলেস্টেরল এর মাত্রা ঠিক রাখা।
  • প্রতিদিনের খাবার এর বাইরে অনেক বেশি শাকসব্জি এবং ফলমূল খাওয়া।
  • ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা।
  • নিয়মিত চেক আপ করানো।
কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয়

কিডনিতে সমস্যার প্রধান কারন হিসেবে ধরা হয় মুত্রের সমস্যা। আমাদের প্রসাবের ক্ষেত্রে মাত্রা বেড়ে যাওয়া, প্রসাবে রক্ত বা পুজ যাওয়া, প্রসাবে অনেক গন্ধ হওয়া ইত্যাদি। তবে এই সব সমস্যার বাইরেও কিডনি সমস্যার ক্ষেত্রে আমাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা হওয়ার মত সমস্যা দেখা দেয়। এখন চলুন জেনে নেই কিডনি তে সমস্যা হলে আমাদের শরীরের কোন কোন অংশে ব্যথা হয় তা সম্পর্কে।
  • প্রথমত আমাদের কোমরে অনেক বেশি ব্যথা করে।
  • আমাদের পিছে ব্যথা হয়।
  • তলপেটে হঠাত ব্যথার সৃষ্টি হয়।
  • প্রসাবের সময় ব্যথা হতে পারে।

কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায়

আমাদের কিডনি সুস্থ আছে কি না এবং কিডনি ঠিকঠাক মত কাজ করছে কি না তা সম্পর্কে এখন আমরা জানবো। বিভিন্ন পন্থা অবলম্বনের মাধ্যমে আমরা আমাদের কিডনি পরীক্ষা করে দেখতে পারি আমাদের কিডনি ভালো আছে কি না। পরীক্ষা সমূহ নিম্নরুপঃ
এসি আর পরীক্ষাঃ এই পরীক্ষার মাধ্যমে আমাদের দেহে এলবুমিন এবং ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা ঠিক আছে কি না তা দেখা যায়। এলবুমিন হলো আমাদের শরীরে থাকা এক ধরনের প্রোটিন।
এই প্রোটিন থাকার ফলে কিডনি আমাদের দেহ থেকে দুষিত পদার্থ ছাকনির মত দেহের বাইরে বের করে দেয়। তাই কিডনি ভালো আছে কি না তা পরীক্ষা করার জন্য আমাদের এসি আর পরীক্ষা করা উচিত।
জি এফ আর পরীক্ষাঃ এই পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা যায় কিডনি আমাদের শরীর থেকে কি পরিমান বর্জ্য দেহের বাইরে বের করতে সক্ষম হচ্ছে তা সম্পর্কে।

কিডনি সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্ন এবং উত্তর (FAQ)

প্রশ্নঃ কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে কত টাকা লাগে?
উত্তরঃ কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে ভারতীয় রুপি অনুযায়ী ৯,৬০,০০০ থেকে ১২,৯০,০০০ রুপি পর্যন্ত লেগে থাকে।
প্রশ্নঃ কিডনি রোগের লক্ষন কি কি?
উত্তরঃ কিডনি রোগের লক্ষনসমূহ নিম্নরুপঃ
  • কাপুনি দিয়ে জ্বর আসা
  • কোমর ব্যথা করা
  • প্রসাবে রক্ত যাওয়া
  • প্রসাবে দুর্গন্ধ করা ইত্যাদি।
আরও পড়ুন  ইসবগুলের ভুসি খেলে কি বীর্য গাঢ় হয় বিস্তারিত জানুন
প্রশ্নঃ কী পরীক্ষা করলে কিডনির অবস্থা বোঝা যায়?
উত্তরঃ ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করলে কিডনির অবস্থা বোঝা যায়।
প্রশ্নঃ কিডনি পয়েন্ট কত হলে তা ভালো হয়ে থাকে?
উত্তরঃ রক্তে ক্রিয়েটিনিন এর পরিমান ০.৬ থেকে ১.২ মিলিগ্রাম থাকলে বুঝতে হবে কিডনি ভালো রয়েছে। এর থেকে কম বা বেশি হলে কিডনি ড্যামেজের সম্ভাবনা থাকে।
প্রশ্নঃ কিডনি সমস্যা হলে কোথায় ব্যথা হয়?
উত্তরঃ কিডনি সমস্যা হলে কোমরে, পিঠে এবং তলপেটে অনেক বেশি পরিমানে ব্যথা হয়ে থাকে।

লেখকের মন্তব্য – কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ

আজকের পোস্ট থেকে আমরা কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ, সুস্থ কিডনির লক্ষণ, কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ, কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার, কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয়, কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে জেনেছি।
আমাদের প্রতিদিনের জীবনে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ফলোও করার কারনে আমাদের কিডনি, হার্ট, ফুস্ফুস ইত্যাদির সমস্যা দেখা দেয়। আমাদের উচিত নিয়ম মেনে আমাদের শরীরের যত্ন নেওয়া এবং সুষম খাবার গ্রহন করা।
যদি আমাদের মধ্যে কারো কিডনি রোগের প্রাথমিক লক্ষন গুলো দেখা দেয়, তাহলে ঘরোয়া উপায়ে বিভিন্ন নিয়ম মেনে চলা এবং পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা। এর পাশাপাশি সঠিক চিকিৎসা নেওয়া। সম্ভব হলে কিডনি প্রতিস্থাপন করে নেওয়া উত্তম।
আশা করি আজকের পোস্ট থেকে আপনি আপনার মূল্যবান তথ্য পেয়েছেন। প্রতিনিয়ত এই ধরনের মূল্যবান তথ্যসমৃদ্ধ পোস্ট পড়তে ওয়েবসাইট ফলোও করুন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন।
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Leave A Reply

Your email address will not be published.