কি খেলে গর্ভের বাচ্চার ওজন বাড়ে বিস্তারিত জেনে নিন
কি খেলে গর্ভের বাচ্চার ওজন বাড়ে বিস্তারিত জেনে নিন
কি খেলে গর্ভের বাচ্চার ওজন বাড়ে
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন বৃদ্ধির খাবার
- একজন নারীর থার্ড ট্রাইমেস্টারে অনেক বেশি পরিমানে আয়রনের প্রয়োজন হয়। আর এই আয়রন এর ঘাটতি পূরণ করার জন্য বাদাম, পালং শাক, মসুর ডাল, ডাবের পানি, মটরশুটি, সবুজ শাক, ফলমূল অনেক বেশি পরিমানে খাওয়া উচিত।
- গর্ভাবস্থায় একজন নারীর অনেক বেশি পরিমানে ভিটামিন সি খাওয়ার প্রয়োজন হয়। আর ভিটামিন সি পুরনের জন্য সাইট্রাস ফল, লেবু ইত্যাদি খাওয়া উচিত।
- একজন গর্ভবতী নারীর ক্যালসিয়াম এর প্রয়োজন হয়। কারন ক্যালসিয়াম গর্ভের বাচ্চার ওজন, উচ্চতা এবং শরীর গঠনে সাহায্য করে। তাই গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম এর প্রয়োজন মেটাতে ডিমের কুসুম, গরু এবং খাসির মাংস বা কলিজা, মাল্টা, মাশরুম, কমলা ইত্যাদি খাবার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত। এছাড়া ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ডি গ্রহন করা উচিত। এর পাশাপাশি প্রতিদিন অন্তত গায়ে রোদ লাগাতে হবে।
- গর্ভের বাচ্চার শরীর গঠনে এবং হাড় মজবুত করতে ক্যালসিয়াম এর প্রয়োজন হয়। এই ক্যালসিয়াম পুরনে একজন গর্ভবতী নারী বাদাম, ডেইরি মিল্ক, দই ইত্যাদি খাওয়া উচিত।
- গর্ভবতী একজন নারীর অনেক বেশি পরিমানে ক্যালরির প্রয়োজন পড়ে। আর এই ক্যালসিয়াম প্রয়োজনে একজন গর্ভবতী নারী খেজুর এবং কিসমিস জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত।
- গর্ভের শিশুর ওজন বাড়ানোর জন্য একজন গর্ভবতী নারীর মাছ, ডাল, ডিম ইত্যাদি খাবার খাওয়া উচিত। কারন এই সময় প্রোটিন জাতীয় খাবার গর্ভবতী নারী এবং বাচ্চার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
- গর্ভবতী নারীদের একটি সাধারন সমস্যা হলো কোষ্ঠকাঠিন্য। এই সমস্যা দুর করতে একজন গর্ভবতী নারীর ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হয়। ফাইবার এর প্রয়োজন মেটাতে সবুজ শাকসব্জি, চিনাবাদাম, বাদামি চাল, মটরশুটি, নারিকেল ইত্যাদি খাবার খাওয়া উচিত।
- কাঁচা কোনো খাবার এই সময় খাওয়া উচিত নয়।
- অর্ধ সেদ্ধ খাবার গর্ভকালীন সময়ে খাওয়া উচিত।
- অতিরিক্ত পরিমানে লবন খেলে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই গর্ভকালীন সময়ে লবন খাওয়া উচিত নয়।
- ঝালজাতীয়, তৈলাক্ত এবং ক্যাফেইন জাতীয় খাবার এই সময় খাওয়া উচিত নয়।
- আমরা জানি মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে অনেক ডায়াবেটিস এর পরিমান বেড়ে যায়। তাই গর্ভাবস্থায় মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত নয়।
শিশুর ওজন বৃদ্ধির চার্ট
- যদি সময়ের আগেই গর্ভের বাচ্চার জন্ম হয়ে যায়, তাহলে তার ওজন কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- যেসকল নারীর ডায়াবেটিস থাকে তাদের ক্ষেত্রে গর্ভপাত হওয়ার পরে শিশুর ওজন কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- গর্ভাবস্থায় একজন নারী অপুষ্টির শিকার হলে গর্ভের বাচ্চার ওজন কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

বাচ্চার ওজন বৃদ্ধির খাবার
- মায়ের বুকের দুধ শিশুর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারন ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন এর অভাব পুরনে মায়ের বুকের দুধের ভূমিকা অপরিসীম।
- পাকা কলায় অনেক বেশি পরিমানে পটাশিয়াম, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি এবং শর্করা থাকে। এই খাবার একজন শিশুর বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করে। সাথে তার দেহের ওজন ঠিক রাখার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখে।
- মিষ্টি আলুতে অনেক বেশি পরিমানে ভিটামিন, ফসফরাস, কপার, পটাশিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ থাকে। মিষ্টি আলু শিশুর বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
- ডাল এ অনেক বেশি পরিমানে ফাইবার থাকে। এছাড়াও প্রোটিন অভাব পুরনে ডাল এর ভূমিকা অনেক। তাই বাচ্চার দেহের ওজন ঠিক রাখার জন্য তার খাদ্য তালিকায় ডাল রাখা উচিত।
- দুগ্ধজাত বিভিন্ন খাবার এ অনেক বেশি পরিমানে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এবং পটাশিয়াম থাকে। এই খাবার দেহের ওজন ঠিক রাখার পাশাপাশি হাড় গঠনে সাহায্য করে।
- ডিম এ অনেক বেশি পরিমানে প্রোটিন, ভিটামিন এবং মিনারেল থাকে। ডিম বাচ্চার দেহের ওজন সঠিক রাখতে সাহায্য করে। তাই বাচ্চার ওজন সঠিক রাখতে ডিম এর ভূমিকা অপরিসীম।
- মুরগির মাংস প্রোটিনের আদর্শ উদাহরন। বাচ্চার দেহের ওজন ঠিক রাখতে মুরগির মাংস তার খাদ্য তালিকায় দেওয়া উচিত।
- বিভিন্ন ধরনের ফল গর্ভকালীন সময়ে খাওয়া উচিত। কারন ফলে অনেক বেশি পরিমানে ভিটামিন, মিনারেল এবং খনিজ বিদ্যমান থাকে। বাচ্চার বেড়ে ওঠা এবং ওজন সঠিক রাখতে ফলের বিকল্প নেই।
কোন খাবার খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে
- মায়ের বুকের দুধ
- কলা
- ডিম
- আলু/মিষ্টি আলু
- মুরগির মাংস
- বিভিন্ন ধরনের ফল
- মাখন
- এভোক্যাডো ইত্যাদি।
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন কত হওয়া উচিত
- প্রথম তিন মাসে শিশুর ওজন বাড়া উচিত – ০.৫ থেকে ২.৫ কেজির মত।
- মাঝের তিন মাসে শিশুর ওজন বাড়া উচিত – ৫০০ গ্রাম থেকে ১ কেজির মত।
- শেষের তিন মাসে শিশুর ওজন বাড়া উচিত – ১৫০ গ্রাম থেকে ১ কেজির মত।
- সুষম খাদ্য খাওয়া উচিত।
- ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত।
- প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত।
- নিয়মিত হাটাচলা করা উচিত।
- তেল জাতীয় খাবার না খাওয়াই উচিত।

কি খেলে গর্ভের বাচ্চার ওজন বাড়ে
গর্ভকালীন সময়ে একজন মহিলার অনেক বেশি পরিমানে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত। কারন পুষ্টির ওপর নির্ভর করে গর্ভের বাচ্চার ওজন, উচ্চতা এবং শরীর গঠন হয়ে থাকে। তাই গর্ভকালীন সময়ে সুষম খাবারের প্রতি নজর দেওয়া উচিত। চলুন জেনে নেই গর্ভকালীন সময়ে খাবার সম্পর্কে, যা খেলে গর্ভের বাচ্চার ওজন বাড়ে।
- শর্করা জাতীয় খাবার – ভাত, রুটি, নুডুলস ইত্যাদি।
- প্রোটিন জাতীয় খাবার – মুরগির মাংস, ডিম ইত্যাদি।
- তেল জাতীয় খাবার না খাওয়াই উত্তম।
- এই সময়ে অনেক বেশি পরিমানে পানি পান করা উচিত।
- খাদ্য তালিকায় ফল রাখা উচিত।