Rajshahi IT BD
Information based blog for new generation
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট – গর্ভাবস্থায় কি খাবার খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে

0 0

গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট – গর্ভাবস্থায় কি খাবার খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে

 

গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট

আজকের পোস্ট এর বিষয় হলো গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট এবং গর্ভাবস্থায় কি খাবার খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে তা সম্পর্কে। এছাড়াও আজকের পোস্ট এ আমরা গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন কম হওয়ার কারণ, বয়স অনুযায়ী বাচ্চার ওজন ও উচ্চতা ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করবো।
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট - গর্ভাবস্থায় কি খাবার খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে

তাহলে চলুন জেনে নেই গর্ভাবস্থায় বাচ্চার বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্পর্কে।

গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট

গর্ভকালীন সময়ে একজন মায়ের পেটে থাকা বাচ্চার সাথে মায়ের পেটের আকার বাড়তে থাকে। সেসময় একজন মায়ের অনেক বেশি কষ্ট হয়ে থাকে। কারন তখন পেট স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি বড় হয়ে থাকে।
একজন শিশু জন্মের পর তার স্বাভাবিক ওজন হওয়া উচিত সাড়ে ৩ কেজির মত এবং স্বাভাবিক উচ্চতা হওয়া উচিত ৫০ বা ৫৫ সেমি এর মধ্যে। গর্ভকালীন সময়ের পর বাচ্চার ওজন এবং উচ্চতা দুটোই ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।
সেসময় একজন গর্ভবতী মা এবং বাচ্চার অনেক বেশি পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত। তবে অনেক ক্ষেত্রে শিশুর বেড়ে ওঠা তার বাবা মায়ের জেনেটিক্স, ডিএনএ ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে একজন শিশু বেড়ে ওঠা নির্ভর করে।
গর্ভের শিশুর গর্ভপাত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সময়কে দুইটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ৮ থেকে ২০ সপ্তাহের মধ্যে একজন শিশুর ওজন ও উচ্চতার কথা উল্লেখ করা আছে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে ২১ থেকে ৪২ সপ্তাহ পর্যন্ত শিশুর ওজন ও উচ্চতা সম্পর্কে বলা হয়েছে। এখন চলুন জেনে নেই গর্ভাবস্থায় ৮ সপ্তাহ থেকে ৪২ সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভের শিশুর ওজন ও উচ্চতা সম্পর্কে।

গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট – ৮ থেকে ২০ সপ্তাহ

 

সপ্তাহ

দৈর্ঘ্য (সে.মি) 

ওজন (গ্রাম)

দৈর্ঘ্য (ইঞ্চি)

ওজন (আউন্স)

সপ্তাহ-৮

১.৫ সে.মি

১ গ্রাম

.৬৪ ইঞ্চি 

.০৫ আউন্স 

সপ্তাহ-৯

২.৩ সে.মি

২ গ্রাম

.৯১ ইঞ্চি 

.০৮ আউন্স 

সপ্তাহ-১০

৩.২ সে.মি 

৫ গ্রাম

১.২৩ ইঞ্চি 

.১৫ আউন্স 

সপ্তাহ-১১

৪.২ সে.মি

৮ গ্রাম

১.৬৩ ইঞ্চি 

.২৪ আউন্স 

সপ্তাহ-১২

৫.৫ সে.মি

১৫ গ্রাম

২.১৫ ইঞ্চি 

.৫০ আউন্স 

সপ্তাহ-১৩

৭.৫ সে.মি

২৪ গ্রাম

২.৯০ ইঞ্চি 

.৮০ আউন্স 

সপ্তাহ-১৪

৮.৬ সে.মি 

৪৪ গ্রাম

৩.৪৩ ইঞ্চি 

১.৫০ আউন্স 

সপ্তাহ-১৫

১০.২ সে.মি

৭০ গ্রাম

৩.৯৫ ইঞ্চি 

২.৪৫ আউন্স 

সপ্তাহ-১৬

১১.৫ সে.মি

১০০ গ্রাম

৪.৬০ ইঞ্চি 

৩.৫০ আউন্স 

সপ্তাহ-১৭

১৩.১ সে.মি

১৩৯ গ্রাম

৫.১০ ইঞ্চি 

৪.৯৫ আউন্স 

সপ্তাহ-১৮

১৪.৪ সে.মি

১৮৯ গ্রাম

৫.৬০ ইঞ্চি 

৬.১০ আউন্স 

সপ্তাহ-১৯

১৫.২ সে.মি

২৪২ গ্রাম

৬.০৫ ইঞ্চি 

৮.৫০ আউন্স 

সপ্তাহ-২০

১৬.৫ সে.মি

৩০০ গ্রাম

৬.৫০ ইঞ্চি 

১০.৬০ আউন্স 

 

গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট -২১ থেকে ৪২ সপ্তাহ

 

সপ্তাহ

দৈর্ঘ্য (সে.মি) 

ওজন (গ্রাম)

দৈর্ঘ্য (ইঞ্চি)

ওজন (আউন্স)

সপ্তাহ-২১

২৫.৫ সে.মি

৩০০ গ্রাম

১০.৭ ইঞ্চি 

১০.৫৫ আউন্স 

সপ্তাহ-২২

২৬.৬ সে.মি

৩৫০ গ্রাম

১০.৫০ ইঞ্চি 

১২.৮ আউন্স 

সপ্তাহ-২৩

২৭.৯ সে.মি

৪২০ গ্রাম

১০.৯৫ ইঞ্চি 

১৫.১৫ আউন্স

সপ্তাহ-২৪

২৮.৮ সে.মি

৫০০ গ্রাম

১১.৪০ ইঞ্চি 

১.১১ পাউন্ড

সপ্তাহ-২৫

৩০ সে.মি

৬১০ গ্রাম

১১.৮৫ ইঞ্চি 

১.৩০ পাউন্ড

সপ্তাহ-২৬

৩৪.৫ সে.মি

৬৭০ গ্রাম

১৩.৬০ ইঞ্চি 

১.৫০ পাউন্ড

সপ্তাহ-২৭

৩৫.৫ সে.মি

৭৫০ গ্রাম

১৪.৫ ইঞ্চি 

১.৬৯ পাউন্ড

সপ্তাহ-২৮

৩৬.৭ সে.মি

৮৭০ গ্রাম

১৪.৪৫ ইঞ্চি 

১.৯৬ পাউন্ড

সপ্তাহ-২৯

৩৭.৪ সে.মি

১০১০ গ্রাম

১৪.৮৫ ইঞ্চি 

২.২৩ পাউন্ড

সপ্তাহ-৩০

৩৮.৫ সে.মি

১১৫০ গ্রাম

১৫.৫ ইঞ্চি 

২.৫৫ পাউন্ড

সপ্তাহ-৩১

৩৯.৮ সে.মি

১৩২০ গ্রাম

১৫.৭০ ইঞ্চি 

২.৯২ পাউন্ড

সপ্তাহ-৩২

৪১.২ সে.মি

১৫০০ গ্রাম

১৬.২০ ইঞ্চি 

৩.৩২ পাউন্ড

সপ্তাহ-৩৩

৪৩.৬ সে.মি

১৭০০ গ্রাম

১৬.৭০ ইঞ্চি 

৩.৭৬ পাউন্ড

সপ্তাহ-৩৪

৪৫ সে.মি

১৯২০ গ্রাম

১৭.৭০ ইঞ্চি 

৪.২৪ পাউন্ড

সপ্তাহ-৩৫

৪৬.৩  সে.মি

২১৫০ গ্রাম

১৮.২০ ইঞ্চি 

৪.৭৪ পাউন্ড

সপ্তাহ-৩৬

৪৭.৫ সে.মি

২৩৮০ গ্রাম

১৮.৭০ ইঞ্চি 

৫.২৪ পাউন্ড

সপ্তাহ-৩৭

৪৮.৫ সে.মি

২৬২৫ গ্রাম

১৯.১৫ ইঞ্চি 

৫.৭৭ পাউন্ড

সপ্তাহ-৩৮

৪৯.৭ সে.মি

২৮৬০ গ্রাম

১৯.৬৫ ইঞ্চি 

৬.৩১ পাউন্ড

সপ্তাহ-৩৯

৫০.৬ সে.মি

৩০৮০ গ্রাম

১৯.৯৫ ইঞ্চি 

৬.৮১ পাউন্ড

সপ্তাহ-৪০

৫০.৩ সে.মি

৩২৮৫ গ্রাম

২০.২০ ইঞ্চি 

৭.২৬ পাউন্ড

সপ্তাহ-৪১

৫০.৬ সে.মি

৩৪৬০ গ্রাম

২০.৪০ ইঞ্চি 

৭.৬৩ পাউন্ড

সপ্তাহ-৪২

৫০.৫ সে.মি

৩৬০০ গ্রাম

২০.২৫ ইঞ্চি 

৮.১০ পাউন্ড

আরও পড়ুন  শীতের জন্য সঠিক স্কিনকেয়ার রুটিন

 

গর্ভাবস্থায় কি খাবার খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে

পূর্বে আমরা গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা গর্ভাবস্থায় কি খাবার খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে তা সম্পর্কে জানব। অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের বাংলাদেশে শিশু বৃদ্ধির হার অনেক কম।
কারন আমাদের দেশের শিশুরা পেটে থাকা অবস্থা থেকে তেমন একটা পুষ্টি পায় না। একজন গর্ভবতী মা যখন ভালো খাবার খাবে এবং সেখান থেকে পুষ্টি পাবে তখনই একজন বাচ্চা সঠিক পুষ্টি পেয়ে বেড়ে উঠবে। একজন শিশুর ৬ মাস বয়স পর্যন্ত বেড়ে ওঠার সময় শুরু হয়।
এই সময় আমাদের উচিত বাচ্চার ওজন পরিমাপ করা। ৩ মাস বয়সে একজন শিশুর ওজন ৩০০-৩৫০ গ্রাম থাকা উচিত। আবার ৭ মাস শেষে শিশুর ওজন ১ কেজি বা তার বেশি হওয়া উচিত। যদি একজন শিশুর উপরোক্ত ওজন থেকে থাকে, তবে তার সঠিক বিকাশ হচ্ছে বলে ধরে নেওয়া হয়।
অন্যদিকে ৩ মাস বয়সে শিশুর ওজন ৩০০ গ্রাম বা তার কম এবং ৭ মাস বয়সে ১ কেজির কম আসে তবে ধরে নিতে হবে শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। তখন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন এবং পুষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। তাহলে চলুন জেনে নেই গর্ভাবস্থায় কি খাবার খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে তা সম্পর্কে। খাবারসমুহ নিম্নরুপঃ
প্রোটিন জাতীয় খাবার
উচ্চ কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিন জাতীয় খাবার একজন গর্ভবতী মা এবং তার গর্ভের শিশুর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারন শর্করা এবং প্রোটিন গর্ভবতী মা কে সুস্থ রাখে। অন্যদিকে গর্ভের বাচ্চার ওজন বাড়াতে এবং দেহ গঠনে সাহায্য করে। তাই একজন গর্ভবতী মা এর প্রতিবেলার খাবারে ডাল, ডিম অথবা মাংস থাকা প্রয়োজন।
কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার
কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খেলে শরীরে অনেক দ্রুত এনার্জি রিফিল হয়ে থাকে। গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের শরীরে অনেক দ্রুত ক্লান্তি চলে আসে। এই ক্লান্তি দূর করতে একজন মায়ের কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। এই খাবার ক্লান্তি দূর করার সাথে সাথে শরীরে ক্যালরির চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে।
ওমেগা-৩ জাতীয় খাবার
চর্বি বা তেল জাতীয় বিভিন্ন ধরনের খাবারকে ওমেগা-৩ খাবার বলা হয়। এই খাবার সমূহ গর্ভের বাচ্চার ব্রেনের সঠিক বিকাশে এবং দেহের ওজন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। সামুদ্রিক মাছে অনেক বেশি পরিমানে তেল বা চর্বি থাকে। যেমন- বাস্পাতা, পাবদা চিংড়ী, ময়া মাছ, মলা মাছ, স্যালমন ইত্যাদি খাবারে ওমেগা-৩ পাওয়া যায়। এছাড়াও বাদাম, এভোকেডোর মত ফলে অনেক বেশি পরিমানে ওমেগা-৩ পাওয়া যায়।
মাংস
আমরা জানি মাংসে অনেক বেশি পরিমানে প্রোটিন বিদ্যমান থাকে। প্রোটিন একজন মায়ের দেহে রক্তসল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। কারন বাচ্চার ওজন কম হওয়ার পেছনে মায়ের রক্তসল্পতা অনেক বেশি কাজ করে। তাই একজন গর্ভবতী মায়ের সপ্তাহে ২-৩ দিন মাংস খাওয়া উচিত।
ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার
আমরা জানি ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার আমাদের দেহের হাড় এবং দাত মজবুত করতে সাহায্য করে। কিন্তু এর পাশাপাশি ক্যালসিয়াম বাচ্চার দেহের ওজন সঠিক রাখতে সাহায্য করে। তাই গর্ভবতী মায়ের দুধ বা দুধ জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত।
ড্রাই ফ্রুটস
শুকনা ফলমুলে অনেক বেশি পরিমানে এন্টি-অক্সিডেন্ট এবং ক্যালরি থাকে। যা একজন গর্ভবতী মায়ের দেহে ইন্সট্যান্ট এনার্জি রিফিল করতে সাহায্য করে। এছাড়া সুগার এর মাত্রা সঠিক রাখতেও ড্রাই ফ্রুটস অনেক কার্যকরী।
মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলুতে অনেক বেশি পরিমানে ভিটামিন বি-৬, পটাশিয়াম এবং কপার থাকে। যা আমাদের শরীরে ভিটামিন এর ঘাটতি পূরণ করে এবং শিশুর হাড়, চামড়া ইত্যাদি তৈরি করতে সাহায্য করে। তাই একজন গর্ভবতী মায়ের সপ্তাহে ৩-৪ দিন মিষ্টি আলু খাওয়া উচিত।
আম
পাকা আম খেলে গর্ভে থাকা বাচ্চার ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পায়। যদি আলট্রাসনোগ্রাফি করার পর মনে হয় যে বাচ্চার ওজণ অনেক কম আছে, তাহলে পাকা আম খাওয়া উচিত। এতে করে বাচ্চার ওজন সঠিক থাকবে।
ঢেড়শ
ঢেড়সে অনেক বেশি পরিমানে আয়রন থাকে, যা একজন বাচ্চার ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। তাই একজন গর্ভবতী মায়ের উচিত খাদ্য তালিকায় ঢেড়স রাখা।
চিড়া
চিড়া তে অনেক বেশি পরিমানে শর্করা থাকে, যা বাচ্চার ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া গর্ভাবস্থায় একজন নারীর অনেক বেশি পরিমানে বমি বমি ভাব দেখা দেয়, খাবার খাওয়াতে অরুচি দেখা দেয় এই সমস্যা সমাধানে চিড়া অনেক বেশি কার্যকরী।
গর্ভাবস্থায় কি খাবার খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে

গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন কম হওয়ার কারণ

পূর্বে আমরা গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট এবং গর্ভাবস্থায় কি খাবার খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে তা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন কম কেন হয় তা সম্পর্কে জানবো। আমাদের দেশের জনসংখ্যার তুলনায় অর্থনৈতিক দিক থেকে অনেক বেশি দুর্বল।
যার কারনে এদেশের মাথাপিছু মানুষ পুষ্টিকর খাবার খেতে পারে না। এর ফলে বেশিরভাগ মানুষ অপুষ্টিতে ভুগে থাকে। একজন গর্ভবতী মায়ের পুরো গর্ভকালীন সময়ে অনেক বেশি পরিমানে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হয়।
সন্তানের ওজন, আকার, উচ্চতা সবকিছু নির্ভর করে মায়ের খাবারের ওপর নির্ভর করে। পূর্বে আমরা জেনেছি গর্ভে বাচ্চা থাকা অবস্থায় ৩ মাস এর সময় বাচ্চার ওজন হতে হবে ৩০০ গ্রাম থেকে ৩৫০ গ্রাম এর মত। আবার ৭ মাস শেষে শিশুর ওজন হতে হবে ১ কেজির বেশি।
যদি এইরকম না হয় তবে একজন গর্ভবতী নারীর ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন জাতীয় খাবার বা ওষুধ খাওয়া উচিত। তা না হলে গর্ভের বাচ্চার ওজন অনেক কম হবে। তার সাথে বিভিন্ন সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

শিশুর ওজন ও উচ্চতা বৃদ্ধির উপায়

পূর্বে আমরা গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট এবং গর্ভাবস্থায় কি খাবার খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে তা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা শিশুর উচ্চতা এবং ওজন কিভাবে বাড়ানো যায় তা সম্পর্কে জানবো। শিশুর জন্মের পর থেকে বেড়ে ওঠা পর্যন্ত দরকার সুষম খাবারের।
একজন ৩-৬ বছর বয়সের শিশুর তার দেহের ওজন হিসাবে দেড় গ্রাম করে প্রতিদিন আমিষ খাওয়া উচিত। একজন ১৪ কেজি বাচ্চার জন্য ২১ গ্রাম আমিষ প্রয়োজন। প্রাকৃতিক বিভিন্ন ধরনের খাবার এই সময় একজন শিশুকে খাওয়ানো উচিত।
বাইরের খাবার একদম এড়িয়ে চলা উচিত। রোদেও ভিটামিন থাকে। এখন চলুন জেনে নেই কোন বয়সে একজন শিশুর কোন ধরনের খাবার খাওয়া উচিত।
৬ মাস বয়সে খাবার
এই বয়সে একজন শিশুর মায়ের বুকের দুধ পান করা উচিত। শিশু জন্মের পর থেকে ৬ মাস বয়স পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ খুবই উপকারী। কারন মায়ের বুকের দুধে বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের শক্তি থাকে।
৬-১১ মাস বয়সে খাবার
৬ মাস বয়সের পর শিশুর বেড়ে ওঠা শুরু হয়। এই সময় মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার এর প্রয়োজন হয়। শিশুর এই সময় বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর ফলের রস, চিনি, দুধজাতীয় বিভিন্ন খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হবে। অল্প অল্প করে চামচ দিয়ে মুখে দেয়ার চেষ্টা করতে হবে।
এরপর শিশু যখন উক্ত খাবার খাওয়া কমপ্লিট করা শুরু করবে, তারপর থেকে শিশুকে পাকা কলা বা আপেল খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হবে। এর কিছুদিন পর শিশুকে সুজি খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হবে। দিনে ১-২ চা চামচ সুজি খাওয়াতে হবে।
এরপর কিছুদিন পর থেকে শিশুকে খিচুড়ি খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হবে। খিচুরি তৈরির জন্য ১ মুঠ চাল, ১/২ মুঠ ডাল, ১ মুঠের মত সবজি, খানিকটা ডিম এবং অল্প একটু তেল দিয়ে খিচুরি রান্না করতে হবে। এরপর শিশুর বয়স যখন ১০ মাসের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে তখন একটু শক্ত খাবার দিতে হবে। যেমন- গাজর, আপেল, মুরগির রান ইত্যাদি।
১-২ বছর বয়সের খাবার
সাধারনত এই বয়সে একজন শিশুর প্লেটে খাওয়ানোর অভ্যাস করা উচিত। এই সময় শিশুকে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার দেওয়া উচিত। যেমন- সেদ্ধ আলু, মুরগির মাংস, ডিম ইত্যাদি। কারন এই ধরনের খাবার শিশুর বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করে।
২-৫ বছর বয়সের খাবার
এই সময় শিশুকে দুধ দেওয়া উচিত। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর সময় ১ গ্লাস দুধ দেওয়া উচিত। সপ্তাহে শিশুকে ৩-৪ টি ডিম খাওয়ানো উচিত। এছাড়া সপ্তাহে মাছ রাখতে হবে তার খাবার তালিকায়। প্রতিদিনের খাবারে ডাল, বাদাম ইত্যাদি খাওয়ানো উচিত। শাকসব্জি এবং ফল রাখতে হবে শিশুর খাবার তালিকায়।
৫-৮ বছর বয়সের খাবার
৫ বছর বয়সে আমরা শিশুকে যে খাবার দেওয়া হয়, সেই একই খাবার এই বয়সেও দিতে হবে। শুধু খাবারের পরিমান বাড়াতে হবে। এই বয়সে একজন শিশুর দুইবেলা আমিষ দেওয়া প্রয়োজন। এছাড়া দুধ এবং দুধজাতীয় খাবার দেওয়া উচিত।
৯-১৩ বছর বয়সের খাবার
এই বয়সে শিশুকে সুষম খাদ্যের ব্যবস্থা করে দেওয়া উচিত। প্রতিদিন খাবার তালিকায় ফলমূল, শাকসবজি, আমিষ, স্নেহ, শর্করা, ভিটামিন জাতীয় খাবার শিশুকে প্রদান করা উচিত।
১৪-১৮ বছর বয়সের খাবার
এই বয়সে এসে শিশুকে আয়রন, ভিটামিন, ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খাওয়ানো উচিত। অন্যান্য খাবার পরিমান মত দেওয়া উচিত।
উপরোক্ত খাবার ছাড়াও একজন শিশুকে নিম্নোক্ত ৮ ধরনের খাবার দেওয়া উচিত। যাতে করে শিশুর বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে কোনো প্রকার চিন্তা না থাকে। তাহলে চলুন জেনে নেই শিশুর বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে কোন ৮ টি খাবার খাওয়ানো উচিত। খাবারসমুহ নিম্নরুপঃ
  • ডিম
  • দুধ
  • মুরগির মাংস
  • গাজর
  • মৌসুমি ফল
  • সয়াবিন
  • পালং শাক
  • মটরশুটি বা ছোলা
আরও পড়ুন  শীতে ত্বকের যত্ন নেওয়ার সহজ পদ্ধতি

বয়স অনুযায়ী বাচ্চার ওজন ও উচ্চতা

বর্তমান সময়ে শিশুরা অপুষ্টির শিকার হয়ে থাকে। যার কারনে শিশুর বেড়ে ওঠায় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। মা যদি পুষ্টিকর খাবার না পায় তাহলে শিশু পুষ্টি পাবে না। আবার অনেক সময় শিশু অপুষ্টির শিকার হলে তাকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যুক্ত খাবার খাওয়ানো হয়।
গর্ভপাত এর পরে আমরা অনেক সময় শিশুর ওজন ও উচ্চতা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ি। এই কারনে এখন আপনাদের সাথে বয়স অনুযায়ী শিশুর ওজন কত থাকা উচিত এবং উচ্চতা কি পরিমান থাকা উচিত তা সম্পর্কে আলোচনা করবো। তাহলে চলুন জেনে নেই শিশুর কোন বয়সে কত উচ্চতা থাকা উচিত।
  • এক বছর পর উচ্চতা ৭৫ সেমি বা ৩০ ইঞ্চি
  • দুই বছর পর উচ্চতা ৮৫ সেমি বা ৩৫ ইঞ্চি
  • তিন বছর পর উচ্চতা ৯৫ সেমি বা ৩৭ ইঞ্চি
  • চার বছর পর উচ্চতা ১০০ সেমি বা ৩৯ ইঞ্চি
  • এরপর থেকে শিশু যত বড় হবে তার উচ্চতা ৫ ইঞ্চি করে বাড়তে থাকে।
বয়স অনুযায়ী বাচ্চার ওজন ও উচ্চতা

গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট (FAQ)

প্রশ্নঃ ৬ সপ্তাহের বাচ্চার ওজন কত হওয়া উচিত?
উত্তরঃ ৬ সপ্তাহের বাচ্চার ওজন ১০-১১ পাউন্ড থাকা উচিত।
প্রশ্নঃ কি খেলে শিশুর অনেক দ্রুত ওজন বাড়ে?
উত্তরঃ শর্করা এবং প্রোটিন জাতীয় খাবার খেলে শিশুর অনেক দ্রুত ওজন বাড়ে।
প্রশ্নঃ কি খেলে শিশুর বুদ্ধি বাড়ে?
উত্তরঃ তেলযুক্ত মাছ এবং আয়রন আছে এইরকম খাবার খেলে শিশুর বুদ্ধি বাড়ে।
প্রশ্নঃ সদ্য জন্ম হওয়া শিশুর ওজন কত থাকা উচিত?
উত্তরঃ সদ্য জন্ম হওয়া শিশুর ওজন ২.৫ কেজি থেকে ৩.৮ কেজি হলে তাকে স্বাভাবিক ওজন ধরা হয়।

লেখকের মন্তব্য

আজকের পোস্ট থেকে আমরা গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট, গর্ভাবস্থায় কি খাবার খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে, গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন কম হওয়ার কারণ, বয়স অনুযায়ী বাচ্চার ওজন ও উচ্চতা ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জেনেছি।
আশা করি আজকের পোস্ট থেকে আপনি আপনার মূল্যবান তথ্য পেয়েছেন। আমরা এই ধরনের মূল্যবান তথ্যসমৃদ্ধ পোস্ট আপনাদের উদ্দেশ্যে শেয়ার করে থাকি। প্রতিনিয়ত পোস্ট পড়তে ওয়েবসাইট ফলোও করুন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন।
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Leave A Reply

Your email address will not be published.