Rajshahi IT BD
Information based blog for new generation
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

ঘুঘু পাখি পালন একটি লাভজনক ও সাশ্রয়ী উদ্যোগ

0 25

ঘুঘু পাখি পালন একটি লাভজনক ও সাশ্রয়ী উদ্যোগ

 

ঘুঘু পাখি বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও সুন্দর পাখি । ঘুঘু পাখি পালন একটি লাভজনক ও সাশ্রয়ী উদ্যোগ । এই পাখিগুলো তাদের মৃদু স্বভাব এবং সুরেলা কণ্ঠের জন্য বিখ্যাত। ঘুঘু পাখি পালন করা একটি সহজ, লাভজনক এবং সাশ্রয়ী উদ্যোগ, যা পাখি প্রেমীদের জন্য একটি মনোমুগ্ধকর অভিজ্ঞতা হতে পারে। এ নিবন্ধে আমরা ঘুঘু পাখি পালনের প্রাথমিক দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করব এবং কীভাবে এটি সঠিকভাবে পরিচালনা করা যায় তা জানাবো।

ঘুঘু পাখি সম্পর্কে কিছু মৌলিক তথ্য

ঘুঘু পাখি (Dove) প্রজাতির পাখি, যা সাধারণত শান্ত এবং সহজে পালনযোগ্য। ঘুঘু পাখি পালন একটি লাভজনক ও সাশ্রয়ী উদ্যোগ । এরা সাধারণত সাদা, ধূসর বা বাদামী রঙের হয়। বাংলাদেশের গ্রামীণ এবং শহুরে উভয় এলাকায়ই ঘুঘু পাখি দেখতে পাওয়া যায়। এই পাখিগুলো মৃদু কণ্ঠে ডাক দেয়, যা শ্রোতাদের মুগ্ধ করে। এছাড়া, ঘুঘু পাখি তাদের দ্রুত বংশবৃদ্ধি করার ক্ষমতার জন্যও পরিচিত, যা তাদের পালনকে আরও লাভজনক করে তোলে।

ঘুঘু পাখি পালনের সুবিধা

ঘুঘু পাখি পালন একটি লাভজনক ও সাশ্রয়ী উদ্যোগ । ঘুঘু পাখি পালন করলে অনেক ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়। যেমন:

সাশ্রয়ী পালন ব্যবস্থা: ঘুঘু পাখি পালন করতে খুব বেশি খরচ হয় না। এদের খাদ্য ও বাসস্থানের খরচ অন্যান্য পাখির তুলনায় কম।

সহজ যত্নের প্রয়োজন: ঘুঘু পাখিরা রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতায়ও যথেষ্ট ভালো। ফলে তাদের রক্ষণাবেক্ষণ সহজ হয়।

আরও পড়ুন  গর্ভাবস্থায় জরায়ু নিচে নামার লক্ষণ জেনে নিন

বংশবৃদ্ধির ক্ষমতা: ঘুঘু পাখি অল্প সময়ে বংশবৃদ্ধি করতে পারে। একটি ভালো পরিবেশে ঘুঘু পাখি বছরে বেশ কয়েকবার ডিম পাড়ে এবং তা থেকে বাচ্চা ফোটায়।

বাজারে চাহিদা: ঘুঘু পাখির বাচ্চা বা ডিম বিক্রয় করে আপনি সহজেই উপার্জন করতে পারেন। এছাড়া ঘুঘু পাখি বিভিন্ন উৎসবে এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও ব্যবহার করা হয়, ফলে এদের চাহিদা থাকে সারা বছর।

ঘুঘু পাখির বাসস্থান তৈরি

ঘুঘু পাখি পালনের জন্য তাদের জন্য উপযুক্ত একটি বাসস্থান তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘুঘু পাখি সাধারণত দলবদ্ধভাবে থাকতে পছন্দ করে। তাই আপনি যদি তাদের ভালোভাবে রাখতে চান, তবে একটি বড় খাঁচা বা ফ্লাইট কেজ তৈরি করতে হবে।

খাঁচার আকার: ঘুঘু পাখি পালনের জন্য একটি মাঝারি আকারের খাঁচা যথেষ্ট। এক জোড়া ঘুঘুর জন্য অন্তত ৩ ফুট দৈর্ঘ্য, ২ ফুট প্রস্থ এবং ২ ফুট উচ্চতার খাঁচা প্রয়োজন।

খাঁচার অবস্থান: খাঁচাটি এমন স্থানে স্থাপন করতে হবে যেখানে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো ও বাতাস প্রবেশ করে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে খাঁচাটি সরাসরি সূর্যের তাপে না থাকে।

বসার জায়গা: খাঁচার ভিতরে পাখির জন্য কয়েকটি বসার কাঠ বা বাঁশের দন্ড স্থাপন করতে হবে, যাতে তারা সহজে বসতে পারে এবং বিশ্রাম নিতে পারে।

পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা: খাঁচা নিয়মিত পরিষ্কার করা অত্যন্ত জরুরি, কারণ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পাখি রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বিশেষত ঘুঘু পাখির মলমূত্র জমা হয়ে গেলে তা দ্রুত পরিষ্কার করা উচিত।

ঘুঘু পাখির খাদ্য তালিকা

ঘুঘু পাখির খাদ্য সঠিকভাবে নির্বাচন করা তাদের সুস্থ থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত ঘুঘু পাখির খাদ্য তালিকা সহজ এবং সাশ্রয়ী।

ধান ও গম: ঘুঘু পাখির প্রধান খাদ্য ধান এবং গম। এদের খাবারে প্রতিদিন ৫০-১০০ গ্রাম ধান বা গম দেওয়া যেতে পারে।

চাল ও ভুট্টা: চাল এবং ভুট্টাও ঘুঘু পাখির খাদ্যতালিকার অংশ হতে পারে। এগুলো ঘুঘু পাখির জন্য সহজপাচ্য এবং পুষ্টিকর।

আরও পড়ুন  ফেসবুক থেকে ইনকাম করার ৫টি কার্যকরী কৌশল

বিশুদ্ধ পানি: প্রতিদিন ঘুঘু পাখির জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হবে। পানি দূষিত হলে পাখি অসুস্থ হতে পারে, তাই নিয়মিত পানির পাত্র পরিষ্কার করা উচিত।

ঘুঘু পাখির বংশবৃদ্ধি প্রক্রিয়া

ঘুঘু পাখি বছরে বেশ কয়েকবার ডিম পাড়ে এবং ১৪-১৬ দিনের মধ্যে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটে। তবে বাচ্চাগুলোকে প্রথম দিকে একটু বিশেষ যত্ন নিতে হয়।

ডিম পাড়ার সময়: ঘুঘু পাখি সাধারণত একবারে ২টি ডিম পাড়ে। ডিমগুলো ১৪ থেকে ১৬ দিনের মধ্যে ফুটে যায়।

বাচ্চাদের যত্ন: বাচ্চা ফোটার পর মা-বাবা পাখি তাদের খাওয়ায়। প্রথম দিকে বাচ্চাদের প্রোটিনসমৃদ্ধ খাদ্য দেওয়া উচিত, যেমন বিশেষ ধরনের বীজ এবং ভুট্টা।

বাচ্চাদের বাসস্থান: বাচ্চাগুলো বড় হওয়া পর্যন্ত খাঁচায় একটু নিরিবিলি পরিবেশ বজায় রাখতে হবে যাতে তারা সহজে বেড়ে উঠতে পারে।

ঘুঘু পাখির রোগব্যাধি ও প্রতিরোধ

যদিও ঘুঘু পাখি তুলনামূলকভাবে স্বাস্থ্যবান পাখি, তবুও কিছু সাধারণ রোগ দেখা দিতে পারে। যেমন:

প্যারাসাইট সংক্রমণ: পাখিদের মধ্যে প্যারাসাইটের সংক্রমণ খুব সাধারণ। নিয়মিত পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে এবং বিশেষ ওষুধ প্রয়োগ করে এই রোগ প্রতিরোধ করা যায়।

রেসপিরেটরি সমস্যা: খাঁচায় পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল না হলে ঘুঘু পাখির শ্বাসযন্ত্রে সমস্যা হতে পারে। তাই খাঁচার অবস্থান এমন স্থানে রাখা উচিত যেখানে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করে।

ফ্লু এবং কলেরা: ফ্লু ও কলেরা ঘুঘু পাখির সাধারণ রোগ। এ ধরনের রোগ দেখা দিলে দ্রুত পশুচিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

ঘুঘু পাখি পালনের আর্থিক লাভ

ঘুঘু পাখি পালন একটি লাভজনক উদ্যোগ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাদের ডিম, বাচ্চা বা পূর্ণবয়স্ক পাখি বিক্রয় করে ভালো আয় করা সম্ভব। এছাড়াও, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও উৎসবে ঘুঘু পাখির ব্যাপক চাহিদা থাকে।

ডিম ও বাচ্চার দাম: একটি ঘুঘু পাখির ডিম বা বাচ্চার দাম সাধারণত বাজারে ১০০-৫০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে, যা পাখির প্রজাতি ও মান অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে।

আরও পড়ুন  সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা

প্রাপ্তবয়স্ক পাখির দাম: প্রাপ্তবয়স্ক ঘুঘু পাখি বিক্রয় করেও ভালো আয় করা যায়। তাদের দাম প্রায় ৫০০-১০০০ টাকার মধ্যে থাকে।

বংশবৃদ্ধির ক্ষমতা: ঘুঘু পাখির দ্রুত বংশবৃদ্ধি করার ক্ষমতার কারণে কিছুদিনের মধ্যেই আপনার পাখির সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং বাজারে বিক্রি করার মতো পর্যাপ্ত পাখি থাকবে।

ঘুঘু পাখি পালন করা সহজ এবং লাভজনক একটি উদ্যোগ। এটি শুরু করার জন্য খুব বেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন হয় না, এবং সঠিক যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে এটি থেকে ভালো আয় করা সম্ভব। পাখির খাদ্য, বাসস্থান এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সঠিকভাবে পরিচালনা করলে ঘুঘু পাখি পালন আপনার জন্য একটি সফল উদ্যোগ হতে পারে।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Leave A Reply

Your email address will not be published.