ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা সম্পর্কে অজানা তথ্য
আজকে আমরা ড্রাগন ফলের উপকারিতা, অপকারিতা এবং অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে জানব। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে।
ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম
- ড্রাগন ফল আমরা ব্যায়ামের আগে বা পরে খেতে পারি। এর ফলে আমাদের ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের যতটুকু শক্তি শেষ হয়ে যায় তা ড্রাগন ফল খাওয়ার মাধ্যমে ফিরে আসে।
- আমরা সকালের নাস্তার পরে অথবা দুপুরে খাবার পর ড্রাগন ফল খেতে পারি। এক্ষেত্রে আমাদের খাওয়ার কমপক্ষে ৩০ মিনিট পর এই ফল খাওয়া উত্তম।
- সকালের নাস্তায় আমরা চাইলে ড্রাগন ফল আমাদের খাবার তালিকায় রাখতে পারি। সে ক্ষেত্রে ড্রাগন ফল খাওয়ার কমপক্ষে ৩০ মিনিট পর পানি পান করা উচিত।
ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ
- ক্যালরি থাকে প্রায় ৬০-৬৫ গ্রাম
- চিনি থাকে প্রায় ৮-১০ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট থাকে প্রায় ১০-১৫ গ্রাম
- প্রোটিন প্রায় ১-২ গ্রাম থাকে
- ডায়েটরি ফাইবারের পরিমান থাকে প্রায় ১-২ গ্রাম।
- চর্বি থাকে প্রায় ১ গ্রামের মত।
- ক্যালরি থাকে প্রায় ৫০-৬৫ গ্রাম
- চিনি থাকে প্রায় ৮-১০ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট থাকে প্রায় ১০-১৫ গ্রাম
- প্রোটিন প্রায় ১-২ গ্রাম থাকে
- ডায়েটরি ফাইবারের পরিমান থাকে প্রায় ১-২ গ্রাম।
- চর্বি থাকে প্রায় ১ গ্রামের কম।
- ড্রাগন ফল ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
- ওজন কমাতে সাহায্য করে
- হজম শক্তি বাড়ায়
- দেহে থাকা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে
- চুল পড়া প্রতিরোধ করে
- রক্ত চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে
ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
- ড্রাগন ফলে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। তার মধ্যে বিটাসায়ানিন, ফেনোলিক এসিড এবং ফ্ল্যাবোনয়েড অন্যতম। এই উপাদানগুলো আমাদের শরীরে থাকা কোষ কে ফ্রি রেডিকেলের হাত থেকে রক্ষা করে। এন্টিঅক্সিডেন্ট সমূহের কারণে শরীর অকালে বুড়িয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পায়।ক্যান্সার প্রতিরোধেও এ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমূহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- ড্রাগন ফলে ভিটামিন সি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। এই ভিটামিন সি ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করে।বর্তমানে পুরো পৃথিবীতে প্রচুর মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। ড্রাগন ফলে ক্যান্সার বিরোধী উপাদান থাকে। তাই ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীরা যদি প্রতিদিন ড্রাগন ফল খেয়ে থাকে তবে ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
- ড্রাগন ফলে এক ধরনের উপাদান থাকে যার নাম মনোসেচুয়েটেড। এই উপাদান হার্টকে ভালো রাখতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। প্রতিনিয়ত ড্রাগন ফল খেলে আমাদের শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমে যায় এবং ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। যার ফলে আমাদের হার্ট ভালো থাকে।
- ড্রাগন ফল এর বীজে ওমেগা-থ্রি (omega-3) এবং অমেগা-নাইন (omega-9) নামে এক ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। যা হার্টকে সুস্থ রাখে। তাই যারা নিয়মিত ড্রাগন ফল খেয়ে থাকেন তাদের হার্টের সমস্যা অনেকটাই হ্রাস পাবে।
- ড্রাগন ফলে ম্যাগনেসিয়াম নামে এক ধরনের উপাদান থাকে যা আমাদের শরীরের হাড় শক্ত এবং মজবুত করতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
- ড্রাগন ফলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো আয়রন। আমাদের অনেকের শরীরে রক্তের অভাব হয়ে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। এই উপাদান আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে রক্তশূন্যতা থেকে রক্ষা করে।
- ড্রাগন ফলে এক ধরনের উপাদান থাকে যার নাম বিটা ক্যারোটিন। এই উপাদান চোখের ছানি এবং ম্যাকুলার ডি জেনারেশন এর ধুকি কমায়। যার কারণে আমাদের দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে। তাই যারা দৃষ্টিশক্তির সমস্যায় ভোগেন, তারা চাইলে প্রতিদিন ড্রাগন ফল খেতে পারেন।
- ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। পটাশিয়াম আমাদের কিডনি ভালো রাখতে অসুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে এটি খুব সহজেই শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত ড্রাগন ফল সেবন করলে ডায়াবেটিসের ঝুকি অনেকাংশে কমে যাবে।
- ড্রাগন ফলে ফাইবার থাকার কারণে এটি আমাদের হজম শক্তিকে বাড়িয়ে দেয়। যার কারণে আমাদের পরিপাকতন্ত্র সুস্থ থাকে এবং পরিপাক ক্রিয়া সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়।
- ড্রাগন ফলে থাকা মিনারেল এবং স্বল্প পরিমাণের ফ্যাটের কারণে এটি আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাই আমরা আমাদের দেহের অতিরিক্ত ওজন কমাতে এই ফল প্রতিদিন খেতে পারি।
- ড্রাগন ফলে থাকা পটাশিয়াম, বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ক্যালসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করতে সাহায্য করে।
- শরীরকে ডিহাইড্রেশন হাত থেকে রক্ষা করে হাইড্রেটেড রাখতে ড্রাগন ফল অত্যন্ত কার্যকরী।
- ড্রাগন ফল আমাদের দেহে চুলকানি, র্যাশ ও শরীর ফুলে যাওয়ার মত অসুখ সৃষ্টি করে। যাদের দেহে এলার্জির রয়েছে তাদের ড্রাগন ফল এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
- ড্রাগন ফলে ফাইবার থাকার কারণে আমাদের হজমে সাহায্য হয় না। কিন্তু সেখান থেকে আমাদের ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- ড্রাগন ফল অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে আমাদের পাচনতন্ত্রের সমস্যা হয়। এ ক্ষেত্রে পেটব্যথা, বমি ইত্যাদির মত সমস্যা দেখা যায়।
- ড্রাগন ফল খেলে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই যাদের অতিরিক্ত গ্যাসের সমস্যা তারা এই ফল এড়িয়ে যেতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা
- ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট বিদ্যমান। যা গর্ভে থাকা বাচ্চার বেড়ে ওঠা নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরের গঠন মজবুত করতে সাহায্য করে।
- গর্ভবতী নারীদের শক্তির উৎস হিসেবে ফ্যাটের প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু গর্ভে থাকা বাচ্চার বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে ফ্যাট প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ড্রাগন আদর্শ ফল। কারণ এতে থাকা এক গ্রামের মতো ফ্যাট গর্ভে থাকা বাচ্চার বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করে। অন্যদিকে গর্ভবতী নারীর কোন প্রকার ক্ষতিসাধন করে না।
- ড্রাগন ফলে ফলিক এসিড ভিটামিন বি ইত্যাদি বিদ্যমান থাকে। এই উপাদানগুলো শিশুর নিউট্রাল টিউব ত্রুটি বা অকাল জন্ম রোধ করে।
- ড্রাগন ফলে প্রোটিন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি ইত্যাদির মত উপাদান থাকে যা গরভবতী নারীদের দেহের শক্তির একটি বড় উৎস।
- গর্ভবতী মহিলারা প্রায়ই কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভুগে থাকেন। অন্যদিকে ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা
ড্রাগন ফল দিয়ে রূপচর্চা
- ত্বক নমনীয় ও নরম করে এবং ত্বকে আদ্রতা যোগ করে।
- ড্রাগন ফলে জিংক এবং ভিটামিন সি আমাদের ত্বকের ব্রণ দূর করে থাকে।
- ড্রাগন ফলে থাকা ভিটামিন সি কোলাজেনের পরিমাণ বাড়ায়। যার কারণে আমাদের ত্বকে থাকা বিভিন্ন দাগ কমতে থাকে এবং ত্বক উজ্জ্বল হয়।
- কয়েক টুকরা ড্রাগন ফল একত্রে নিয়ে পেস্ট বানাতে হবে। এরপর তুলার সাহায্যে ব্রণের উপর বা ব্রনের দাগের উপর লাগিয়ে দিতে হবে। কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে ব্রণের সমস্যা দূর করা যায়।
- ড্রাগন ফলের পেস্ট ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর সাথে অথবা অ্যালোভেরা জেল এর সাথে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করতে হয়। এই প্যাক তবে ১৫-২০ মিনিট এর মত লাগিয়ে রাখার পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে আমাদের মসৃণ ও উজ্জ্বল হবে।
- দইয়ের সাথে ড্রাগন ফলের রস মিশিয়ে আমাদের ত্বকে লাগিয়ে রাখতে হবে। এতে আমাদের ত্বক সব সময় হাইড্রেটের থাকবে।