তল পেটের চর্বি কমানোর ঔষধ সম্পর্কে জেনে নিন
তল পেটের চর্বি কমানোর ঔষধ সম্পর্কে জেনে নিন
প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আজকের পোস্ট পেটের চর্বি সম্পর্কে। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা জানতে চান তল পেটের চর্বি কমানোর ঔষধ কি, পেটের চর্বি কমানোর ৯টি সহজ উপায়, চর্বি কমানোর খাবার তালিকা, বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম ইত্যাদি সম্পর্কে। আজকে আমরা এ বিষয়গুলো নিয়েই আলোচনা করব।
চলুন জেনে নেই পেটের চর্বি কমানোর ঔষধ, বিভিন্ন সহজ উপায়, খাবার তালিকা এবং ব্যায়াম সম্পর্কে
পেটের চর্বি কমানোর ৯টি সহজ উপায়
- তাড়াতাড়ি খাবার খাওয়ার অভ্যাস বাদ দিয়ে দিতে হবে।
- আমাদের প্রতিবেলার খাবার যথাসময়ে সেরে ফেলতে হবে।
- সবসময় ছোট প্লেটে খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
- কেউ দাওয়াত করলে সৌজন্য বজায় রাখতে যতটুকু খাওয়া দরকার ঠিক ততটুকু খেতে হবে।
- চিন্তামগ্ন অবস্থায় খাওয়া পরিহার করতে হবে।
- প্রতিদিন সঠিক সময় পর্যন্ত ঘুমাতে হবে।
- আমাদের প্রতিদিনের চাল বা ময়দা বদলে ফেলা।
- লো-ফ্যাট যুক্ত খাবার খাওয়া।
- সাদা পাউরুটি
- ডায়েট এর জন্য ব্যবহৃত সোডা
- বিভিন্ন ফলের শরবত
- বিভিন্ন ধরনের বা রঙের চকলেট।
- আলু দিয়ে বানানো চিপস
- পিজ্জা
- পেস্ট্রি কেক
- ফ্রেঞ্চ ফ্রাই
- বিভিন্ন ধরনের আইস্ক্রিম
ব্যায়াম ছাড়া পেটের মেদ কমানোর উপায়
- আমরা যখন দুপুরবেলা খাবার খাবো তখন আমাদের উচিত ১০০% এর মধ্যে ৫০% ক্যালরি যুক্ত খাবার খাওয়া। কারন এই সময় হজমশক্তি ভালো থাকে। রাতের সময় আমাদের ক্যালরি যুক্ত খাবার না খাওয়াই উত্তম। আর সন্ধ্যা ০৭ টার পূর্বে রাতের ডিনার করা আমাদের জন্য সবথেকে উত্তম।
- খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের পেটের চর্বি কমানোর জন্য কিছু খাবার বাদ দেয়া ভালো। খাবার গুলো হলো- চিনিজাতীয় বা চিনিযুক্ত বিভিন্ন ধরনের খাবার, বিভিন্ন রকমের মিষ্টি, বিস্কুট, পাউরুটি ইত্যাদি।
- রাতে ঘুমানোর সময় আমাদের মেথি ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরের দিন সকালে ভেজানো মেথি জলসহ পান করতে হবে।
- ব্যায়াম না করে চর্বি কমানোর ক্ষেত্রে আমরা তেতুলকে বেছে নিতে পারি। কারণ তেঁতুল খেলে পেটের মেদ কমে যায়। জিহ্ববার স্বাদ বেড়ে যায়, হজম শক্তি বাড়ে এবং ওজন কমে যায়।
- আমাদের প্রতিদিনের খাবারের পর আমরা ত্রিফলা নামক ফল খেতে পারি। এই ফল হজম শক্তিকে বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমে যায়।
- আমরা আমাদের পেটের অতিরিক্ত চর্বি গলাতে আদার গুঁড়ো পানির সাথে মিশে খেতে পারি। আদা গুঁড়ো আমাদের হজম শক্তি বাড়িয়ে দেয় এবং শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- যদি আমাদের অনেক বেশি পরিমাণে তৃষ্ণা লাগে, তখন আমাদের ঠান্ডা পানি এড়িয়ে যাওয়া উচিত।তখন যদি আমরা গরম পানি খাই তাহলে আমাদের শক্তি বাড়বে এবং ওজন কমে যাবে।
- খাবার সময় আমাদের খাবার ভালো করে চিবিয়ে খাওয়া উচিত। খাবার অনেক সময় ধরে চিবিয়ে খেলে সেই খাবার হজম হতে খুব অল্প সময় নেয়।
- আমাদের পেটের চর্বি কমাতে আমরা প্রতিদিন সকালে অথবা বিকালে 30 মিনিটের মত হাঁটতে পারি।
উপরের পেটের মেদ কমানোর উপায়
- আমরা আমাদের প্রতিদিনের খাবারে বিভিন্ন ধরনের তৈলাক্ত খাবার খেয়ে থাকি। বিভিন্ন ধরনের তেলে ভাজা খাবার, মিষ্টি জাতীয় খাবার অথবা ফাস্ট ফুড খেয়ে থাকে। এ ধরনের খাবার সচরাচর অস্বাস্থ্যকর হয়ে থাকে। এসব খাবার সমূহ আমাদের দেহে অতিরিক্ত ক্যালোরের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যার কারণে আমাদের উপরের পেট এর মেদ বেড়ে যায়।
- আমরা অনেক সময় বিভিন্ন কারণে শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করি না। আমরা অলসতার কারণে সব সময় বসে বা শুয়ে থাকতে পছন্দ করি। এই বসে থাকা বা শুয়ে থাকার কারণে আমাদের দেহের অতিরিক্ত চর্বি বেড়ে যায়।
- আমরা আমাদের বেশিরভাগ সময় দুশ্চিন্তার মধ্য দিয়ে কাটাই। যখন আমরা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করি, তখন আমাদের শরীরে এড্রেনাল গ্রন্থি থেকে এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত হয়। যা আমাদের দেহে উপরের পেটে মেদ তৈরি করতে সাহায্য করে।
- আমরা অনেক সময় রাতে কম ঘুমাই। আবার অনেক সময় পুরো রাত জেগে পার করে দেই। এই ঘুম কম হওয়ার কারণে আমাদের উপরের পেটে মেদ জমতে থাকে।
- এতক্ষণ আমরা জানলাম ওপরের পেটে মেদ কেন হয়। এখন আমরা এই উপরের পেটে মেদ কমানো সম্পর্কে জানব। চলুন জেনে নেই কিভাবে আপার বেলি ফ্যাট কমানো যায়।
- আমাদের প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা। চিকিৎসকের মতে, দিনে প্রায় সাত থেকে আট গ্লাস পানি পান করা উচিত। আমরা যখন সকালে ঘুম থেকে উঠবো তখন লেবু এবং মধু মিশিয়ে খেতে পারি।এক্ষেত্রে খুব সহজেই আমাদের ওপরের পেটের মেদ কমে যায়।
- আমাদের প্রতিদিনের খাবারে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া উচিত। এক্ষেত্রে আমরা ওটস কে বেছে নিতে পারি। ওটস এর সাথে দুধ বা বিভিন্ন ধরনের ফল দিয়ে খেতে পারি।
- আমরা আমাদের প্রতিদিনের খাবারে স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে চলা উচিত। বিভিন্ন ধরনের আশ জাতীয় খাবার, অনেক বেশি পরিমাণে পানি খাওয়া উচিত।
- চিকিৎসকের মতে, প্রতিদিন ০৬-০৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত। কারণ পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম হলে লেফটিন নামক এক ধরনের হরমোন হলে শরীরে কম উৎপন্ন হয়। যার কারণে আমাদের ক্ষুধা ভাব দেখা দেয় না।
- এছাড়া আমাদের ওপরের পেটের চর্বি কমানোর জন্য সপ্তাহে অন্তত ৪-৫ দিন ব্যায়াম করা উচিত। ব্যায়াম আমাদের শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।
পেটের মেদ কমানোর ব্যায়াম
- আমাদের পা কে কিছুটা দূরত্বে ফাঁক করে দাঁড়াতে হবে। এরপর মাথার পেছনে হাত দিয়ে প্রথমে ডান দিকে এবং পরে বাম দিকে ঝুকতে হবে। এভাবে অন্তত ২০-২৫ মিনিট ব্যায়াম করতে হবে।
- আমাদের একদম সোজা হয়ে শুতে হবে। আমাদের হাত দুটোকে আমাদের নিতম্বের নিচে বা পেটের কিছুটা উপরে রাখতে হবে। এরপর দুই পা একসাথে কিছুটা উপরে তুলতে হবে এবং নামাতে হবে। এইভাবে ১০ থেকে ১৫ বার করতে হবে।
- পেটের মেদ কমানোর জন্য সবথেকে ভালো ব্যায়ামগুলো প্ল্যাংক। এই ব্যায়ামের ক্ষেত্রে দুহাত কনুই থেকে কবজি পর্যন্ত মাটিতে এবং পায়ের আঙ্গুলের মাথা মাটিতে রাখতে হবে। এভাবে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মতো থাকতে হবে।
- আমাদের পুরো শরীরকে শুইয়ে দিতে হবে। এরপর হাঁটু কিছুটা ভাঁজ করে সামনের দিকে আনতে হবে।এরপর হাটুতে হাত রেখে অথবা আমাদের মাথার পিছনে হাত রেখে আমাদের মাথা হাটু বরাবর ওঠানামা করাতে হবে।
তল পেটের চর্বি কমানোর ঔষধ
- কোবেস ১২০ এম.জি
- ওস্ট্যাট ১৫০ এম.জি
- ওবিলিট ১২০ এম.জি
- ওবিলিক্স ১২০ এম.জি
পেটের মেদ কমানোর খাবার তালিকা
- বিভিন্ন ধরনের ফল ও সবজিযুক্ত খাবার খাওয়া। সকল খাবারে ফাইবার এবং বিভিন্ন ধরনের মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট থাকার কারণে আমাদের দেহের মেদ কমাতে সাহায্য করে।
- গ্রিন টি আমাদের শরীরকে সতেজ রাখার পাশাপাশি ওজন কমাতেও ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
- অলিভ অয়েল দিয়ে রান্না করা খাবার খাওয়া। অলিভ ওয়েলে খুব কম পরিমাণে ফ্যাট থাকে। তাই অলিভ অয়েল দিয়ে রান্না করা খাবার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
- আমাদের পেটের মেদ কমাতে আমরা সামুদ্রিক মাছ খেতে পারি। সামুদ্রিক মাছে লো-ফ্যাট থাকে। যার কারণে এটি আমাদের দেহে মেদ বাড়তে দেয় না।
- প্রতিদিনের রুটিনে আমাদের উচিত সাত থেকে আট গ্লাস পানি পান করা। এছাড়া বয়স ও উচ্চতা ভেদে পানি খাওয়ার পরিমাণ কম বা বেশি হতে পারে। পানি আমাদের শরীরে অতিরিক্ত চর্বি বাড়তে দেয় না।
- আমাদের প্রতিদিনের খাবারে আশ জাতীয় বিভিন্ন খাবার খাওয়া উচিত। আশ জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। যা আমাদের হজম শক্তিকে বাড়াতে সাহায্য করে। এর ফলে আমাদের দেহে অতিরিক্ত চর্বি জমে না।