ব্রয়লার মুরগি খাওয়ার ভয়াবহতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
ব্রয়লার মুরগি খাওয়ার ভয়াবহতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
ব্রয়লার মুরগি খাওয়ার ভয়াবহতা
ব্রয়লার মুরগি খাওয়ার ভয়াবহতা
- ফার্মে ব্রয়লার মুরগিকে বিভিন্ন ধরনের ক্যামিক্যাল যুক্ত খাবার খাওয়ানো হয়, মোটাতাজা করানোর জন্য। যখন আমরা পরবর্তীতে এই ব্রয়লার মাংস খাবার হিসেবে গ্রহন করি, তখন আমাদের দেহে মাংসের সাথে বিভিন্ন ধরনের ক্যামিক্যাল প্রবেশ করে। যা আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
- ব্রয়লার মুরগি খেলে আমাদের দেহে ক্যান্সার, হৃদপিন্ডের বিভিন্ন সমস্যা সহ শরীরের বিভিন্ন ক্ষতিসাধন হয়। এখন চলুন জেনে নেই ব্রয়লার মুরগি খাওয়ার ভয়াবহতা সম্পর্কে।
- ফার্মে ব্রয়লার মুরগিকে অনেক বেশি পরিমানে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো হয়। এই অ্যান্টিবায়োটিক আমাদের মানুষদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। কারণ এই এন্টিবায়োটিক মানুষের ব্রেনের ক্ষতি করে।
- যখন আমরা ব্রয়লার মুরগি খাবার হিসেবে গ্রহণ করি, তখন ব্রয়লার মুরগিতে থাকা অ্যান্টিবায়োটিক এর প্রভাবে মানবদেহের অ্যান্টিবায়োটিক-রেজিস্ট্যান্ট নামে যে ব্যাকটেরিয়া থাকে তার প্রভাব কমে যায়। ফলে আমাদের শরীরে নানা অসুখ বাসা বাঁধে।
- ব্রয়লার মুরগি রান্না সময়ে এক ধরনের পদার্থ উৎপন্ন হয়। যার নাম কারসিনোজেনিক। এই পদার্থ একজন মানুষের শরীরে ক্যান্সারের জন্ম দিতে সক্ষম।
- বয়লার মুরগিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি থাকে। তার কারণে ব্রয়লার মুরগি অতিরিক্ত খেলে আমাদের শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- ব্রয়লার মুরগী খেলে দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। এই কোলেস্টেরললের মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গিয়ে মানবদেহে ক্যান্সারের জন্ম দেয়। যা মোটেও ভালো বিষয় নয়।
- ফার্মে ব্রয়লার মুরগিকে মোটা দেখানোর জন্য সিন্থেটিক নামে এক ধরনের হরমোন দেওয়া হয়। যদি একজন স্বাভাবিক পুরুষ প্রতিদিন ব্রয়লার মুরগি খাবার হিসেবে গ্রহণ করে তাহলে অন্যান্য পুরুষের তুলনায় তার প্রজনন ক্ষমতা কমে যাবে।
- ব্রয়লার মুরগিকে সুস্থ রাখার জন্য প্রচুর পরিমাণে আর্সেনিক প্রয়োগ করা হয়। এই আর্সেনিক মানবদেহে মস্তিষ্কের সমস্যা, ক্যান্সার এবং ডায়াবেটিসের মতো অসুখের জন্ম দিতে সক্ষম।
- গবেষকরা বলেন ব্রয়লার মুরগিতে ৬৫-৭০% কলাই ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা একজন মানুষের ফুড পয়জনিং এর মত সমস্যা সৃষ্টি করে।
পোল্ট্রি মুরগি খাওয়া নিষেধ কেন

ব্রয়লার মুরগির মাংসের উপকারিতা
- ব্রয়লার মুরগির মাংস অনেক বেশি পরিমাণে প্রোটিন বিদ্যমান। যা মানব দেহের পেশিকে শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করে।
- ব্রয়লার মুরগীর মাংসে খুব কম পরিমাণে চর্বি থাকে। যা একজন উচ্চ রক্তচাপ এর রোগীর খাদ্যের জন্য আদর্শ উচ্চ হতে পারে।
- ব্রয়লার মুরগির মাংসে এক ধরনের উপাদান থাকে। যার নাম ট্রাইটোফেন। এটি হলো এক ধরনের অ্যামিনো এসিড। যা একজন মানুষের মস্তিষ্কে নিঃসৃত সেরেটোনিন এর মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে উক্ত ব্যক্তি চাপমুক্ত থাকে।
- ব্রয়লার মুরগির মাংস মানব দেহের হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ করতে সক্ষম।
- ব্রয়লার মুরগির মাংসের আরেকটি উপাদান থাকে, যার নাম হোমোক্রিস্টাইল। এই উপাদান একজন মানুষের হার্ডকে ভালো রাখে।
- ব্রয়লার বা পোল্ট্রি মুরগির মাংসের প্রচুর পরিমাণে ফসফরাস থাকে। এই ফসফরাস একজন মানুষের দাঁত ও হাড়ের স্বাস্থ্য গঠনে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। এছাড়া লিভার, কিডনি এবং স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- ভিটামিন বি-৬ নামে ব্রয়লার মুরগির মাংসে এক ধরনের ভিটামিন থাকে। যা একজন মানুষের দেহের হজম শক্তি বাড়াতে সক্ষম।
- নিয়াসিন নামক এক ধরনের ভিটামিন শরীরকে ক্যান্সার থেকে মুক্ত রাখে।
- পোল্ট্রি বা ব্রয়লার মুরগির মাংসে আলফা এবং বিটা ক্যারোটিন, লাইকোপেন ইত্যাদি থাকে। যা একজন মানুষের চোখ ভালো রাখতে সাহায্য করে।
ব্রয়লার মুরগির ক্ষতিকর দিক
- বয়লার মুরগিকে বড় করার জন্য বিভিন্ন ধরনের হরমোনাল ইনজেকশন দেওয়া হয়। এই ইঞ্জেকশন এ থাকা উপাদানগুলো মানব শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি করে।
- ফার্মে ব্রয়লার মুরগি দুই থেকে তিন মাস পোষা হয়। এই স্বল্প সময়ের মধ্যে বয়লার মুরগিকে স্বাস্থ্যবান দেখানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। এই অ্যান্টিবায়োটিক সমূহ মানুষের শরীরে অনেক ক্ষতি সাধন করে।
- ব্রয়লার বা পোল্ট্রি মুরগিকে বিভিন্ন অসুখের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বিষাক্ত আর্সেনিক প্রয়োগ করা হয়। যখন আমরা খাবার হিসেবে ব্রয়লার মুরগির মাংস খাই তখন এই আর্সেনিক আমাদের দেহে প্রবেশ করে এবং বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি সাধন করে।
- ব্রয়লার বা পোল্ট্রি মুরগির মাংসে ব্যাকটেরিয়া থাকে। গবেষকরা বলেন ৯৬% ব্রয়লার মুরগিতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত অবস্থায় থাকে। তাই আমরা মাংস হিসেবে ব্রয়লার মুরগী খেলে এই ব্যাকটেরিয়া আমাদের দেহে প্রবেশ করে এবং বিভিন্ন ধরনের অসুখ সৃষ্টি করে।
- ব্রয়লার মুরগির মাংস থাকা ক্রোমিয়াম আমাদের দেহে ক্যান্সার, ডায়াবেটিস ইত্যাদির মত অসুখ সৃষ্টি করে।
- তাই বলা যায় ব্রয়লার মুরগি খাওয়ার ভয়াবহতা অনেক। আমরা বুঝে শুনে এবং পরিমাণমতো এই ব্রয়লারের মাংস গ্রহণ করব।
ব্রয়লার মুরগির ডিমের ক্ষতিকর দিক
- ব্রয়লার মুরগিকে বড় করার সময় অনেক বেশি পরিমাণে চর্বিযুক্ত ক্যাটল ফিড খাওয়ানো হয়। যার কারণে ব্রয়লার মুরগির ডিমেও প্রচুর পরিমাণে চর্বি থাকে। যা একজন মানুষের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
- ব্রয়লার মুরগির ডিমে স্বাদ দেশি মুরগি অথবা অন্যান্য মুরগির ডিম থেকে কম হয়। যার কারণে অনেকে এ ডিম পছন্দ করে না।
- ব্রয়লার মুরগির ডিমে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থেকে থাকে। যার কারণে সিদ্ধ না করে এই ডিম ভেজে খাওয়াই উত্তম।
- ব্রয়লার মুরগির ডিমে অন্যান্য মুরগির ডিমের তুলনায় পুষ্টিগুণাগুণ কম থাকে। যার কারণে এটি আমাদের শরীরের জন্য তেমন পুষ্টি সমৃদ্ধ নয়।
- ব্রয়লার মুরগির ডিম খেলে এলার্জির সম্ভাবনা দেখা দেয়। আর যাদের এলার্জি সমস্যা রয়েছে তারা এই বয়লার মুরগির ডিম খেলে তাদের সমস্যা আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ব্রয়লার মুরগি খাওয়ার অপকারিতা
- মানবশরীরে ক্যান্সার দেখা দিতে পারে।
- ব্রেন টিউমার হতে পারে।
- দেহের ইমিউনো সিস্টেম কে নষ্ট করে।
- ফুড পয়জনিং সৃষ্টি করে।
- প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস করে।
- ডায়াবেটিস ও হার্টের বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করে।
- দেহে কোলেস্টেরল এর মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।