রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে কি হয়
প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আজকে আমরা কিসমিস সম্পর্কে জানব। অনেকেই প্রশ্ন করেন রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে কি হয়, কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত ইত্যাদি সম্পর্কে। আজকে আমরা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কেই আলোচনা করব।চলুন জেনে নেই কিসমিসের বিভিন্ন পুষ্টি গুনাগুন এবং এর উপকারিতা, অপকারিতা ইত্যাদি সম্পর্কে।
প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত
- ফ্রুক্টোজ
- গ্লুকোজ
রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে কি হয়
সকালে খালি পেটে কিসমিস খাওয়ার নিয়ম
কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- কয়েক গ্রাম কিসমিস আমাদের দেহে তৎক্ষণাৎ শক্তি যোগাতে সাহায্য করে। কিসমিসের মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম ইত্যাদি আমাদের দেহে দ্রুত শক্তি পৌঁছে দিতে সাহায্য করে।
- আমাদের দেহের রক্ততন্ত্রে হিমোগ্লোবিন এর মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যার কারনে আমাদের দেহে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় না। আমরা যদি নিয়মিত কিসমিস খাই তবে আমাদের রক্ত পরিষ্কার থাকবে এবং দেহে রক্তশুন্যতার অভাব দূর হয়ে যাবে।
- কিসমিসের মধ্যে থাকা পটাসিয়াম আমাদের হার্ট বা কিডনী ভালো রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন পরিমানমত কিসমিস খেলে আমাদের হার্টের সমস্যা দূর হয়ে যায়।
- কিসমিসে থাকা আরেকটি উপাদানের নাম হলো ফাইবার। যা আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। তবে এটি বেশি পরিমানে খাওয়া উচিত নয়। সেক্ষেত্রে আমাদের ডায়রিয়া, পাতলা পায়খানার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- কার্বোহাইড্রেট নামক উপাদান যা আমাদের দেহে শক্তি বৃদ্ধি করতে সক্ষম। এই উপাদান কিসমিসের মধ্যে লক্ষ করা যায়। তাই প্রতিদিন নিয়ম মেনে কিসমিস খেলে আমাদের দেহে শক্তি অনেকটা বৃদ্ধি পাবে।
- ক্যান্সার প্রতিরোধে কিসমিসের ভূমিকা লক্ষ করা যায়। কারন কিসমিসে কোলিন নামে এক ধরনের উপাদান থাকে, যা আমাদের দেহের ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- আমাদের মধ্যে অনেকের উচ্চ রক্তচাপ থাকে। এই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে কিসমিস ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। কিসমিসে থাকা পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
- যারা ডায়েট করতে চান ওজন কমানোর জন্য, তারা চাইলে এই কিসমিস খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন। কারন কিসমিসে থাকা উপাদান সমূহ দেহের ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
- কিসমিসে আর এক ধরনের উপাদান থাকে, যার নাম বোরন। এই খনিজ মানবদেহে শুক্রানুর পরিমান বাড়িয়ে দিয়ে সেক্স বাড়িয়ে দেয়।
- চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে কিসমিসের মধ্যে থাকা বিটা-ক্যারোটিন এবং বিভিন্ন ভিটামিনের গুরুত্ব রয়েছে।
- কিসমিসে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম থাকে, যা আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
- কিসমিস একদিকে হজমে কাজ করে, অন্যদিকে এটি অতিরিক্ত পরিমানে খেলে হজম শক্তি কমে যায়। খুব বেশি পরিমানে কিসমিস সেবন আমাদের পরিপাকতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
- যদি আমরা নিয়মের বাইরে কিসমিস খাই তবে আমাদের দেহে এলারজির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- কিসমিসে বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ক্যালরী এবং চিনি। যা অতিরিক্ত পরিমানে সেবন করলে আমাদের দেহে শর্করার পরিমান বেড়ে যায়। যার ফলে উচ্চ রক্তচাপের মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম
- প্রথমত আমাদের কালচে রঙের কিসমিস নিতে হবে, একদম চকচকে রঙের কিসমিস না নেওয়াই উত্তম।
- এরপর ২-৩ কাপ পরিমান পানি নিয়ে তাতে ১২০-১৫০ গ্রাম কিসমিস ভিজিয়ে দিতে হবে।
- সকালে কিসমিস থেকে পানি আলাদা করতে হবে।
- এরপর আমরা ভিজানো কিসমিস খেতে পারি। এছাড়া কিসমিসের পানিও আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
- কিসমিসে ভিটামিন ও মিনারেল থাকে। যা আমাদের দেহে কোলেস্টেরল দূর করতে সাহায্য করে।
- ভেজা কিসমিস উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
- রক্তশূন্যতা অথবা রক্তস্বল্পতার মত রোগ কমিয়ে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।
- ভেজা কিসমিস খেলে আমাদের হজম শক্তি বাড়ে। যার ফলে আমরা কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো অসুখ থেকে বাঁচতে পারি।
- ভেজার কিসমিস আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়।
- শরীর থেকে বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য পদার্থ বের করে শরীর বিষমুক্ত রাখে।
খেজুর ও কিসমিস এর উপকারিতা
- আমরা জানি, খেজুর এবং কিসমিস দুটোতেই আমাদের দেহে পটাশিয়ামের মাত্রা বাড়াতে সক্ষম। যার ফলে আমাদের দেহের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- কিসমিসে বিভিন্ন ধরনের উপাদানের মধ্যে ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম উল্লেখযোগ্য। এই দুই উপাদান দেহে এসিডের মাত্রা কমিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
- প্রতিদিন খেজুর ও কিসমিস খেলে আমাদের দৃষ্টি শক্তি ভালো থাকে।
- খেজুরে বিভিন্ন ধরনের উপাদানের মধ্যে পটাশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার ইত্যাদি উপাদান থাকে। যা আমাদের মস্তিষ্কের ব্রেন পাওয়ারকে বাড়িয়ে দেয়।
- নিয়মিত খেজুর এবং কিসমিস খেলে দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়। যার ফলে আমাদের হৃদপিণ্ড সুস্থ থাকে।
- কিসমিসের বোরন এবং ক্যালসিয়াম নামক উপাদান থাকে। যা হাড় গঠনে সাহায্য করে।
- খেজুরে থাকা ভিটামিন সি এবং ডি আমাদের ত্বককে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে সাহায্য করে।
দুধ কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা
- দুধ এবং কিসমিস একসাথে খেলে আমাদের পরিপাকতন্ত্র সুস্থ থাকে।
- আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে দুধ কিসমিসের ভূমিকা অনেক।
- দুধ এবং কিসমিসের মধ্যে ক্যালসিয়াম থাকার কারণে আমাদের হাড়ের স্বাস্থ্য গঠনে ব্যাপকভাবে ভূমিকা পালন করে।
- দুধ এবং কিসমিসের মধ্যে আয়রন থাকার কারণে আমাদের দেহে ক্লান্তি ও দুর্বলতা দূর হয়। এছাড়া আমাদের দেহে রক্তের অভাব দূর করতে দুধ এবং কিসমিসের ভূমিকা অনেক।
- যৌনজীবন ভালো রাখতে দুধ এবং কিসমিসের অবদান অনেক।