Rajshahi IT BD
Information based blog for new generation
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

মাথার কাছে মোবাইল রেখে ঘুমালে কি হয়?

0 7

মাথার কাছে মোবাইল রেখে ঘুমালে কি হয়?

আমাদের আজকের আর্টিকেল মাথার কাছে মোবাইল রেখে ঘুমালে কি হয় তা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
প্রতিদিনের জীবনে মোবাইল ফোন আমাদের সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে গেছে। কাজ, বিনোদন, যোগাযোগ—সবকিছুতেই মোবাইল ফোনের ব্যবহার অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।

কিন্তু এই প্রয়োজনীয় ডিভাইসটি যখন ঘুমের সময় আমাদের মাথার কাছাকাছি থাকে, তখন কি সেটা আমাদের শরীর ও মনকে ক্ষতি করতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হলে আমাদের মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন, মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব, এবং আমাদের শরীরের ওপর এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। এই আর্টিকেলে  আমরা এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবো।

মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন ও তার প্রভাব

মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত হয় ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন, যা মূলত রেডিও ওয়েভ। যখন আমরা ফোন ব্যবহার করি, তখন এই রেডিয়েশন আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। যদিও এই রেডিয়েশনের শক্তি খুব কম, কিন্তু এর প্রভাব নিয়ে গবেষণা রয়েছে। কিছু গবেষণায় বলা হয়েছে, দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইল ফোনের রেডিয়েশনের সংস্পর্শে থাকলে মস্তিষ্কের টিউমার হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে।

ঘুমের মানের ওপর প্রভাব

মোবাইল ফোনের কাছাকাছি থাকার কারণে আমাদের ঘুমের মান অনেকাংশে কমে যেতে পারে। মোবাইল ফোনের স্ক্রীন থেকে নির্গত ব্লু লাইট আমাদের মেলাটোনিন হরমোনের উৎপাদন ব্যাহত করে। মেলাটোনিন হলো এমন একটি হরমোন, যা আমাদের ঘুমানোর সময় বলে দেয়। যখন এটি কমে যায়, তখন আমাদের ঘুমাতে সমস্যা হয় এবং ঘুমের মানও কমে যায়। রাতে মোবাইল ফোনের স্ক্রীনে বেশি সময় কাটালে বা ফোনটি মাথার কাছে রাখলে ঘুম কম হতে পারে এবং আপনি ক্লান্তবোধ করতে পারেন।

আরও পড়ুন  ক্যামেরার ব্যবহার, আধুনিক যুগের একটি অপরিহার্য ডিভাইস

মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব

মোবাইল ফোন আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা রাতে মোবাইল ফোন নিয়ে শুয়ে থাকে, তারা বেশি মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ অনুভব করে। এর কারণ হতে পারে সোশ্যাল মিডিয়ায় অতিরিক্ত সময় কাটানো, যা নেতিবাচক চিন্তা বা আবেগের সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া, নোটিফিকেশন, মেসেজ, এবং কলের কারণে ঘুম ভেঙে যাওয়াও উদ্বেগ ও মানসিক চাপ বাড়াতে পারে।

দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক প্রভাব

দীর্ঘমেয়াদী মোবাইল ফোনের ব্যবহার এবং রাতে মোবাইল ফোনের কাছাকাছি ঘুমানোর ফলে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ, গবেষণায় দেখা গেছে, মোবাইল ফোনের রেডিয়েশনের প্রভাবে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া, দীর্ঘমেয়াদে ঘুমের সমস্যা হলে তা হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ওজন বৃদ্ধি ইত্যাদির ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

মোবাইল ফোনের কাছ থেকে দূরে থাকার উপায়

মোবাইল ফোনের নেতিবাচক প্রভাব থেকে নিজেকে রক্ষা করতে কিছু পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে:

– **মোবাইল ফোন দূরে রাখা:** ঘুমানোর সময় মোবাইল ফোনকে বিছানা থেকে দূরে রাখুন। আপনার ফোনটি অন্য রুমে বা দূরের টেবিলে রাখুন।

– **ফ্লাইট মোড ব্যবহার করুন:** যদি আপনি ফোনটি দূরে রাখতে না চান, তাহলে ফোনটি ফ্লাইট মোডে রাখুন। এতে রেডিয়েশনের মাত্রা কমবে।

– **ব্লু লাইট ফিল্টার:** রাতের সময় মোবাইল ফোনের ব্লু লাইট ফিল্টার চালু রাখুন, যা আপনার চোখ এবং ঘুমের মান রক্ষা করবে।

– **ডিজিটাল ডিটক্স:** মাঝে মাঝে মোবাইল ফোন থেকে দূরে থাকুন এবং নিজেকে ডিজিটাল ডিটক্সের সুযোগ দিন। এতে আপনার মানসিক চাপ কমবে এবং মনকে রিফ্রেশ করতে পারবেন।

উপসংহার

মাথার কাছে মোবাইল রেখে ঘুমানো স্বাস্থ্যের জন্য একেবারেই ভালো নয়। মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন, ঘুমের মান, মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ছাড়াও এটি শারীরিক অন্যান্য সমস্যারও কারণ হতে পারে।

আরও পড়ুন  জিম করার পর কাঁচা ছোলা খেলে কি হয়? জিম করার আগে ও পরে কি খাওয়া উচিত

সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য মোবাইল ফোনের ব্যবহার সীমিত রাখা উচিত এবং বিশেষত ঘুমানোর সময় ফোনকে যতটা সম্ভব দূরে রাখতে হবে।

এমন কিছু অভ্যাস গড়ে তুলুন, যা আপনার শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাবে। রাতের সময় মোবাইল ফোনের বিকল্প হিসেবে বই পড়া, মেডিটেশন বা গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের মতো কার্যক্রমে সময় দিন। এতে আপনার ঘুমের মান উন্নত হবে এবং আপনি প্রতিদিন সকালে সতেজ ও ফ্রেশ অনুভব করবেন।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Leave A Reply

Your email address will not be published.